জবির নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ 

নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহা ও জবি লোগো
নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহা ও জবি লোগো  © সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহার বিরুদ্ধে একই দপ্তরের দুই সহাকারী প্রকৌশলীকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাল্টাপাল্টি ‍দুটি অভিযোগ দিয়েছে।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর এবং রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে অভিযোগ দুটির বিষয়ে জানা গেছে।

জানা যায়, সহকারী প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলামের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈদ্যুতিক পোল মেরামতের জন্য ২৫ হাজার টাকা আসে। কিন্তু তাকে কাজ করতে না দিয়ে নিজের মানুষ দিয়ে কাজটি করান নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহা। পরে কাজটি ২০ হাজার টাকায় সম্পন্ন হলে তার বিল করে বাকী ৫ হাজার টাকার প্রধান প্রকৌশলীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিতে চান মাজহার। এতে বাধা দিয়ে

অপূর্ব কুমার ওই টাকা নিজে নিতে চাইলে বাধে দ্বন্দ্ব।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে গত সোমরার (২০ সেপ্টেম্বর) অপূর্ব ও মাজহার দুইজনেই প্রধান প্রকৌশলীর কক্ষে গেলে তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে অপূর্ব রেগে গিয়ে মাজহারকে মারতে উদ্যত হন। এসময় ওই কক্ষে থাকা আরেক সহকারী প্রকৌশলী গৌতম কুমার সিকদার তা ঠেকাতে গেলে তার গায়ে চড় ও ঘুষি লাগে। পরে প্রধান প্রকৌশলী পরিস্থিতি শান্ত করেন।

ঘটনার বিষয়ে সহকারী প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমি প্রধান প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে বেঁচে যাওয়া টাকা জমা দিতে চাইলে অপূর্ব স্যার রেগে যান। তিনি অভিযোগ করেন যে, কাজটি অসম্পূর্ণ। অথচ, কাজটি কিন্তু তার পছন্দ করা মানুষই করেছেন। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে মারতে উদ্ধত হন।

ঘটনার সময় উপস্থিত অপর সহকারী প্রকৌশলী গৌতম কুমার সাহা বলেন, আমি ঠেকাতে গিয়ে মার খেলাম। যত যাই হোক, একজন সিনিয়র হয়ে জুনিয়র কলিগের গায়ে হাত দিতে পারেন না তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশে আইন আছে। আমরা এর বিচার চাই।

প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহার বিরুদ্ধে এর আগেও সহকর্মী মারধরের অভিযোগ আছে। ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট অপূর্ব কুমার একই দপ্তরের আরেক কর্মচারী টেলিফোন টেকনিশিয়ান রতন ঘোষকে মারধর করেন। এ ঘটনায় রতন ঘোষ বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অভিযোগ দিলে তার পরিবারের সদস্যদের ফোনে হুমকি-ধামকিও দেন অপূর্ব।

সহকর্মী মাজহারুলকে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে চাননি নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহা। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সাথে যোগাযোগ করেন। আমি এ বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না।

পূর্বেও এক কর্মচারীকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তখন ফোন কল কেটে দেন।

তবে সহকারী প্রকৌশলী মাজহারুলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে পাল্টা একটি অভিযোগ দিয়েছেন অপূর্ব সাহা। অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, সহকারী প্রকৌশলীরা তার সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং বলেন তার অধীনে কাজ করবেন না। এরপর তারা নানা রকম খারাপ ও উত্তেজনাপূর্ণ মন্তব্য করেন।

মারধরের ঘটনার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আমার সামনে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি (মারধর) ঘটে। পরে দুই পক্ষ অভিযোগ করেছে। এর আগেরও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। আমি বিষয়টি দেখছি। সমস্যাটি এখানে সমাধান না হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে সামনে আগাবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: ওহিদুজ্জামান বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছে ঘটনাটি জানার জন্য। প্রকৌশল দপ্তর বিষয়টি দেখছে। আমাদের কাছে সরাসরি অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত করে দেখব।


সর্বশেষ সংবাদ