৭ কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা
২ দিনের মধ্যে পরীক্ষার তারিখ না পেলে ফের আন্দোলন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২১, ০৭:১৮ PM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২১, ০৭:১৮ PM
গণহারে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের খাতার পুনঃমূল্যায়ন, দ্রুততম সময়ে বিশেষ পরীক্ষা গ্রহণসহ মোট চার দফা দাবি পূরণের জন্য আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেতে আন্দোলনে নামে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করার পর বিশেষ পরীক্ষার আশ্বাসে নীলক্ষেত ছেড়ে যান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দুই দিনের মধ্যে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা না করলে আবারও আন্দোলনে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
কর্মসূচি চলার মধ্যে আন্দোলনকারীদের পাঁচজনের একটি প্রতিনিধি দল দুপুরে সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
পরে সেই প্রতিনিধি দলের সদস্য সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, “স্যার বিশেষ পরীক্ষার ব্যাপারে আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বিভাগীয় চেয়্যারম্যান স্যারদের সাথে আলোচনা করে পরীক্ষার তারিখ জানানোর কথা বলেছেন। আমরা এজন্য দুই দিনের সময় দিয়েছি।
“তার আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছি। দুইদিন পর ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পাওয়া না গেলে আমরা আবারও আন্দোলনে ফিরব।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, “আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাঁচজন প্রতিনিধি আজকে আমার সঙ্গে দেখা করেছে। আমি তাদেরকে বলেছি, তারা যাতে তাদের বিভাগীয় চেয়ারম্যান বা অধ্যক্ষদের মাধ্যমে ফেলের সঠিক চিত্র নিয়ে আসে। জেনারেল চিত্র দিয়ে তো কোনো কিছু করা যাবে না। সঠিক চিত্রটা পেলে আমরা ঢাকা ইউনিভার্সিটিকে বিষয়টা বলতে পারব।”
তিনি বলেন, “তারা বিশেষ পরীক্ষার দাবি জানিয়েছে। এটাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। বিশেষ পরীক্ষা তো অবশ্যই নিতে হবে, সেটা আমাদের বিবেচনায় আছে। তবে কোনো সময় বেঁধে দিয়ে নয়, একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আমরা তাদের পরীক্ষা নেব “
কর্মসূচিতে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক মাসে সাত কলেজের আট থেকে নয়টি বিভাগের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সেই ফলাফলে দেখা গেছে ‘বিপর্যয়’। এর মধ্যে ইংরেজি বিভাগে সাতটি কলেজেই গণহারে ‘ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ২০১৫-২০১৬ সেশনের ইংরেজি বিভাগের অনার্স চতুর্থ বর্ষে ‘ভয়াবহ ফলাফল বিপর্যয়’ হয়েছে।
তিতুমীর কলেজের ২৪১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৯৩ জন ফেল, ইডেন মহিলা কলেজের ২১০ জনের মধ্যে ১৭৫ জন ফেল, সরকারি বাংলা কলেজের ১১৬ জনের মধ্যে ৯২ জন ফেল, বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের ৪৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩০ জন ফেল করেছেন। অন্যান্য বিভাগের ফলাফলও ভালো নয়।
“এত বিপুল শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ার পেছনে কোনো কারণ কলেজ প্রশাসন দেখাতে পারছে না। আমরা চাই খাতাগুলোর আবার মূল্যায়ন করা হোক। "
সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী ওসমান গনী বলেন, “আমাদের ২০১৯ সালের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ২০২১ সালে, চার বছরের কোর্সে ছয় বছর লেগে গেছে। তারপর ফলাফলে দেখা গেছে গড়ে সবাইকে একটা সাবজেক্টে ফেল করানো হয়েছে।
“ক্লাস না হলেও আমরা ফুল সিলেবাসে পরীক্ষা দিয়েছি। গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে আমাদের ছয় বছর লেগে গেছে, আমরা গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করে এই সাত কলেজ থেকে মুক্তি চাই, আমরা খাতার পুনর্মূল্যায়ন চাই।"
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ( শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, “রাস্তায় নামলেই কি সমাধান হয়ে যায় নাকি? তাদের উচিত ছিল সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলা। তাদের অধ্যক্ষরা সেটা আমাদের জানাবে।”
গণহারে ফেলের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “খাতা তো দেখেছে সাত কলেজের শিক্ষকরাই, এটা তো আর ঢাকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষকরা দেখেনি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জিজ্ঞাসা করেছি, ওই খাতাগুলো সাত কলেজের শিক্ষকরাই দেখেছেন।”