বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে বিভাগীয় শহরে ফিরতে চান খুবির শিক্ষার্থীরা
- খুবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২১, ১১:১৬ PM , আপডেট: ১১ জুলাই ২০২১, ১১:১৬ PM
চলমান কঠোর লকডাউনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের আশপাশে মেসগুলো অবস্থান করছেন। মাস্টার্স চূড়ান্ত বর্ষ, চতুর্থ বর্ষ ও অনান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা প্রস্তুতি, অনলাইনে ক্লাস করা, ডিফেন্স ও ভাইভা দেওয়ার জন্য এরা থাকছেন। আবার বেশকিছু শিক্ষার্থীরা টিউশন করান। এ অবস্থায় আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে বাসায় ফিরে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন এসব তারা।
তথ্যমতে, সারাদেশে চলছে কঠোর লকডাউন গণপরিবহন সব বন্ধ থাকায় এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে; কিভাবে তারা বাসায় ফিরবেন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে (বাস) বিভাগীয় শহরে পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা। ইতোমধ্যে বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিভাগীয় শহরে নিজস্ব পরিবহনে পৌছে দিয়েছেন।
শুক্রবার (৯ জুলাই) ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের কার্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় পেজে করোনা থেকে সুরক্ষা থাকতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, প্রতিটি পরিবারের জন্য ঈদ অত্যন্ত বিশেষ একটি ইভেন্ট। যাইহোক, আমরা একটি জটিল সময় পার করছি। আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য ঝুঁকি নেওয়া এড়িয়ে চলুন। আশা করি, আমরা এই দু:সময় কাটিয়ে উঠবো।
এরপর বেশকিছু শিক্ষার্থীরা নিজ বিভাগীয় শহরগুলোয় ক্যাম্পাসের পরিবহনে যেতে চান। এমন দাবি করে তাদের মতামত কমেন্ট করেন। কিন্তু গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাস চাওয়ার মন্তব্যের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ থেকে কোন ধরনের রিপ্লাই দিতে দেখা যায়নি। তবে ওই ফেসবুক পেজের অন্যান্য পোস্টগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায় ছাত্রদের কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়া হয়েছে।
এই পেজে কমেন্ট করা বেশকিছু শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতিবেদকের কথা হয়েছে। ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলাম সোহান বলেন, লকডাউনে অনেক শিক্ষার্থী আটকা পড়েছে,তাই অনান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আমাদের জন্য বিভাগীয় শহর পর্যন্ত বাসের ব্যবস্থা করা হলে শিক্ষার্থীরা অনেক উপকৃত হবে। অনলাইন ক্লাস এবং পরীক্ষা দিতে এসে প্রায় ৪০০/৫০০ শিক্ষার্থী খুলনায় আটকা পড়েছে তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও তাদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করা উচিত।
বাংলা ডিসিপ্লিনের আসাদুল হাসান আসাদ বলেন, পরীক্ষা হবে বিষয়টি জেনে এসেছি। আবার অনেকে ক্লাসের জন্য এসেছে। গ্রামে ইন্টারনেট সমস্যা। ক্লাস করাই যেখানে সমস্যা সেখানে পরীক্ষা সম্ভব না। আসার পর লকডাউন। যেতে পারছি না তাই বাস দরকার।
পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, গত ঈদের সময় করোনার প্রকোপ অনেকটা কমে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসে। গ্রামের বাড়িতে পর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় এবং টিউশনের কারণে এলাকা থেকে চলে আসি। হঠাৎ করেই প্রশাসন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এবং সেই সাথে দেশের সকল পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়।
“এই লকডাউনে বাসায় যাওয়া অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে বিভাগীয় শহরগুলোতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক উপকার হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম বলেন, থিসিসের কাজে খুলনায় এসেছিলাম কিন্তু এখন তো আটকে গেছি। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাড়ি যেতে পারছি না। ইতোমধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছাতে তাদের নিজস্ব বাসের ব্যবস্থা করেছে। আমাদের কর্তৃপক্ষ যদি এ রকম সিদ্ধান্ত নেন তাহলে আমরা খুবই উপকৃত হবো।
এ বিষয়ে খুবির ছাত্রবিষয়ক পরিচালক মো. শরীফ হাসান লিমন বলেন, ১৪ তারিখের আগ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। খুলনা জেলা বর্তমানে করোনার হটস্পট জোনে আছে। এই অবস্থায় থেকে আমরা কতটুকু কি করতে পারব সে বিষয়ে নিশ্চিত নই। ইতোমধ্যে কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে আমার এই বিষয়ে কথা হয়েছে তাছাড়া আমরাও আলোচনা করছি। লকডাউন তুলে নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
খুবির পরিবহন পুলের পরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ জুলফিকার হোসাইন বলেন, এগুলো তো আমাদের হাতে নেই। আমরা পরিবহন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে যে সিদ্ধান্ত নেবে আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব।