বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছে পিসাইকেল
- ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২১, ০২:০৬ PM , আপডেট: ০৫ জুন ২০২১, ০২:১৩ PM
আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। বর্তমান অন্ধকারময় পরিস্থিতিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের টিকে থাকার লড়াইয়ে বিপন্ন পরিবেশকে পূর্বের ন্যায় স্বচ্ছ ও সুন্দর করাটা অনেকাংশে কঠিন হলেও আমরা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে পারি। এই চেষ্টাকেই সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘বাস্তুতন্ত্রের পুনরুদ্ধার’ (Ecosystem Restoration)।
মূলত উদ্ভিদ, প্রাণী ও মানুষকে ঘিরে যে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিরাজমান সেটিই হলো পরিবেশ। সুস্থ এবং সুন্দরভাবে জীবন যাপনের জন্য এই পারিপার্শ্বিক অবস্থা ভালো হওয়াটা খুবই জরুরী। প্রকৃতির এই পারিপার্শ্বিক অবস্থা কখনো মানুষের অনুকূলে আবার কখনও বা প্রতিকূলতাপূর্ণ। কিন্তু বর্তমান অবস্থা অনেকটাই ভিন্ন। সুন্দর পরিবেশ তৈরির উপাদান পানি, বাতাস, মাটি, উদ্ভিদ অনেকটাই হুমকির সম্মুখীন। চারপাশে বিদ্যমান বিভিন্ন সজীব এবং নির্জীব উপাদানের উপরও মনুষ্যসৃষ্ট ও জলবায়ুগত নেতিবাচক প্রভাবে পরিবেশের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাঁধার সম্মুখীন। এছাড়াও জলবায়ুগত পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের যেসব দেশ হুমকির সম্মুখীন বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। দেশের লাখ লাখ নাগরিককে বিভিন্ন সময়ে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, দাবদাহ, অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টি, খরা সহ অন্যান্য মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমন অবস্থায় দেশের সক্রিয় নাগরিক হিসেবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতন করতে ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখাতে নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে পিসাইকেল। আর এই পুরো কার্যক্রমের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে পিসাইকেলের সহযাত্রী হয়েছে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস.কম ।
এ কার্যক্রমের উদ্যোক্তারা জানান, সম্প্রতি ব্রিটিশ কাউন্সিলের ‘কপ-২৬’ ইয়ুথ এঙ্গেইজমেন্ট চ্যালেঞ্জ ফান্ড জিতেছে পরিবেশবাদী সংগঠন পিসাইকেল এর ক্লাইম প্লাস সোশ্যাল অ্যাকশন প্রজেক্ট উদ্যোগ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশে। এছাড়াও বাংলাদেশের জন্য আরও বড় হুমকি হচ্ছে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ অপরিশোধিত প্লাস্টিক। মানুষের সচেতনতার অভাবে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলার ফলে পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে তেমনি যত্রতত্র মাটির সাথে প্লাস্টিক বর্জ্য মিশে মাটিকে করে তুলেছে বিষাক্ত। এমন অবস্থায় যতদিন যাবে মানুষ যদি সচেতন না হয় তবে পরিবেশ ও আবহাওয়া দুটোই ব্যবহারের জন্য অসহনীয় হয়ে পড়বে।
পিসাইকেল এর ফাউন্ডার ও টিম লিড মেহেদী হাসান বাপ্পী বলেন, প্রকল্পটি পরিবেশের অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মাঠে সমানতালে কাজ করছে। তবে সোশ্যাল অ্যাকশন প্রজেক্ট ক্লাইম প্লাস একটি নতুন মডেল উদ্যোগ যা স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী দুটি পর্যায়ে কাজ করবে । প্রাথমিকভাবে এই কার্যক্রমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যুবকদের জলবায়ু পরিবর্তনের নানান খুঁটিনাটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করে ‘ইয়ং ক্লাইমেট অ্যাডভোকেট’ হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। আর পরবর্তীতে এসব প্রশিক্ষিত যুব প্রতিনিধিগণ অনলাইন এবং অফলাইনে সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করতে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, এই কার্যক্রমের প্রথম ধাপে স্বেচ্ছাসেবীদের জন্য জলবায়ু সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও 5R সম্বন্ধে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।
পিসাইকেলের ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ওমর আহমেদ বলেন, আমরা আশা করছি আমাদের এই কার্যক্রমের মধ্যদিয়ে পরিবেশ রক্ষায় এবং জলবায়ুর উন্নয়নে তরুণ প্রজন্মের জ্ঞানগত বিকাশ এবং বর্জ্য রিসাইক্লিং ব্যবস্থাপনায় স্মার্ট সমাধান সরবরাহ করতে পারবো।
এছাড়াও বর্তমান পরিবেশের এই বিপন্ন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন না হয়ে এর সুরক্ষায় সম্মিলিতভাবে সবাইকে নিয়ে কাজ করার কথাও জানালেন পিসাইকেল এর মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন এক্সিকিউটিভ হাসান তামিম। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি প্রজন্ম যারা কিছু অভ্যাস পাল্টানোর মাধ্যমে প্রকৃতির শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারি। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের চারপাশের সবুজায়ন বৃদ্ধির জন্য বেশি করে বৃক্ষরোপণ করা, খাল, নদী, উপকূল পরিষ্কার রাখা, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর প্রয়াস চালানো প্রয়োজন। আর এবছরের পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়েও এসবের উপর জোর দেয়া হয়েছে। তাই এ পরিবেশ দিবসে ভার্চুয়াল মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠ পর্যায়েও আমরা কর্মসূচি পালন করব। আর সামাজিক এই উদ্যোগের সাথে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের যুব সংগঠন ইয়ুথ এসেম্বলির যুব সদস্যরাও আমাদের সাথে কাজ করছেন।
আরও দেখুন: ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের বৃক্ষরোপন