ইবি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক  © ফাইল ফটো

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। প্রেমের প্রস্তাব মেনে না নেওয়ায় তিনি এমন কাজ করেছেন বলে জানা গেছে। যৌন হয়রানির শিকার একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। আজ মঙ্গলবার ( ১১ মে) রাতে প্রক্টর বরাবর এ লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ফারুক হোসেন নামে ওই ছাত্র তাকে সরাসরি ও মেসেঞ্জারে বিরক্ত করে আসছেন। করোনাকালীন ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার আগেও বেশ কয়েকবার কুপ্রস্তাব দেয় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দলবেঁধে বাজে মন্তব্য করতেন এবং বিভিন্ন হুমকিও দিতেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী। এসময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার সহপাঠীদের জানায়। এর কিছুদিন পরেই করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যায়।

ওই ছাত্রী বলেছেন, ‘সম্প্রতি তিনি আবারো এমন কাজ করেছেন। আমি তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় উনি আমার ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন এবং আমার ক্ষতি করার হুমকি ধামকি দেন। ছাত্রীকে ক্যাম্পাসের রাজনৈতিক নেতা এবং বড় ভাইদের ভয় দেখিয়েছেন। এরপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমার ছবি দিয়ে ফেক আইডি খুলেছেন এবং ফটোশপে আমার ছবি বিকৃতি করে পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, ভাইয়া, আপুদের রিকোয়েস্ট দিয়েছেন।’

ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, ‘অশ্লীল ছবি এবং ভিডিও পাঠিয়েছেন। এ ধরনে কর্মকাণ্ডে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি এবং একইসাথে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিন।’ ফারুকের ‘কুপ্রস্তাব, হুমকি এবং মানসিক ও সামাজিকভাবে লাঞ্ছিতের’ ঘটনার প্রতিকার চেয়েছেন যোন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্ত ফারুকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীক হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯ সালের দিকে বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে মেসেঞ্জারে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ইংরেজি ও উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ছাত্রীকে মেসেঞ্জারে উত্ত্যক্ত করেন ফারুক। এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এর আগে আজ মঙ্গলবার সকালের দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে স্ট্যাটাস দেন। এতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে। এরপর ওই স্ট্যাটাস মুছে ফেলার জন্য অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তাকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রায় তিন ঘন্টা পর ওই গ্রুপ থেকে পোস্টটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছি। সেই সাথে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার নামে খারাপ আইডি খোলা ও কুপ্রস্তাব হুমকি ধামকির ঘটনার প্রতিকার চাচ্ছি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর ফোন বন্ধ। ভুক্তভোগীর অভিযোগ এখনও হাতে পাইনি। অভিযোগ পেলে দুপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি জেনে পরবর্তী ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।’


সর্বশেষ সংবাদ