ক্যাম্পাস খোলার আগেই ফিরছেন খুবি শিক্ষার্থীরা
- খুবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২০, ১০:১৯ AM , আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২০, ১০:৫৩ AM
চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘসময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় ক্যাম্পাস খোলার আগেই ফিরছেন শিক্ষার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেকেই টিউশনি বা পার্ট টাইম চাকরি ছাড়াও একঘেয়েমি কাটানো, অনলাইন ক্লাসের জন্য ইন্টারনেট সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এবং পড়াশোনার করতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে খুলনা ফিরেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এতে অনাবাসিক শিক্ষার্থী মেসে অবস্থান করলেও সমস্যায় পড়ে গেছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে মেসে থেকে। তবে এদের মধ্য থেকে অনেকেই বন্ধুদের মেসে থাকছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী টিউশনি বা পার্ট টাইম চাকরি করে নিজের খরচ চালান। অনেকে আবার পরিবারকেও আর্থিকভাবে সহায়তা করেন। করোনাকালীন এই সময়ে অকেটা বিপদে পড়ে আছেন তারা। এ পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, টিউশনির টাকা ছাড়া অনলাইন ক্লাসের জন্য ইন্টারনেট কেনার সামর্থ্যও তাঁদের নেই।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী ইমরান শরীফের বাড়ি মানিকগঞ্জ। টিউশনি করে নিজের খরচ নিজেই বহন করেন। করোনা পরিস্থিতিতে বাসায় থাকলেও কয়েক দিন ধরে শিক্ষার্থীর পরিবার থেকে পড়ানোর জন্য তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। টিউশনি চলে যাওয়ার ভয়ে বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাস খোলার আগেই খুলনায় চলে এসেছেন ইমরান। তাঁর মতো অনেক শিক্ষার্থী এরই মধ্যে খুলনায় চলে এসেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী আক্ষেপ করে বলেন, ‘করোনার কারণে আমার সব টিউশনি চলে গেছে। নতুন টিউশনির খোঁজে এবং বন্ধুদের ডিভাইসের সাহায্য নিয়ে অনলাইন ক্লাস করার জন্য খুলনায় এসেছি। এখন পর্যন্ত কোনো আশা খুঁজে না পেয়ে আপাতত রংমিস্ত্রির কাজ করছি।’
আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, এলাকায় দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ নেই। অথচ অনলাইনে প্রায় প্রতিদিনই ক্লাস হচ্ছে, অ্যাসাইনমেন্ট নেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত অনলাইন ক্লাসে অংশ নেওয়ার জন্য খুলনায় ফিরে এসেছেন।
কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী আজহারউদ্দীন বলেন, নিজ এলাকায় ইন্টারনেট এর সমস্যার কারনে ঠিকমত অনলাইনে ক্লাস করতে পারি না। এদিকে ক্লাস টেস্ট, এ্যাসাইনমেন্ট নেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। এই জন্য দ্রুত ক্যাম্পাসে ফিরেছেন। তাছাড়াও তিনি জুম অ্যাপের মাধ্যমে টিউশনি করান। খুলানাতে এসে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন কোন প্রকার নেট বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে না।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী ইমরান ইসলাম মামুন বলেন, প্রতিদিন অনলাইনে ক্লাস করতে চরম ভোগান্তির স্বীকার হতে হয় নেটওয়ার্ক সমস্যা জনিত এর কারনে। এই অবস্থায় দ্রুত ক্যাম্পাসে ফেরা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এছাড়াও নিজের টিউশনিটাও করাতে পারছেন।
এদিকে দেশে করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে কিছুটা শিথিল হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ঘরবন্দি জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে খুলনায় ফিরে এসেছেন।