নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েই শরণার্থী আমরা
- ফাতেমা তুজ জিনিয়া, বশেমুরবিপ্রবি
- প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০২:৩০ PM , আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০২:৪১ PM
"আমাদের কোনো নিজস্ব শিক্ষক নেই, ক্লাসরুম নেই, ল্যাবরুম নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষপ্রান্তে একটা পরিত্যক্ত ভবনে আমরা ক্লাস করি। ক্লাসের হোয়াইট বোর্ড থেকে শুরু করে মার্কার,ডাস্টার সবকিছু নিজেদের কিনতে হয়েছে। অন্যান্য বিভাগের শিক্ষকরা সময় পেলে সপ্তাহে একদিন অথবা দুদিন ক্লাস নেন এবং অন্য বিভাগগুলো আমাদেরকে তাদের ল্যাবে প্রবেশের সুযোগ দিলে আমরা ল্যাবে কাজ করার সুযোগ পাই। কেউ আমাদের দায়িত্ব নিতে চায়না। নিয়মানুযায়ী ভর্তি হয়েও নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েই শরণার্থীর মত আছি আমরা।” এভাবেই নিজেদের দুরাবস্থার কথা বলছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা আইসিটি ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী রাবিতা ইসলাম সেতু।
নিজস্ব শিক্ষক, নিজস্ব গভর্নিং বডি, ল্যাবসুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি অব্যাহত রাখাসহ সাত দফা দাবিতে আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেছে ইনস্টিটিউটটির শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ভর্তির সময় সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড.খোন্দকার নাসিরউদ্দিন, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের সাবেক সভাপতি আক্কাস আলী এবং সাবেক প্রক্টর আশিকুজ্জামান ভুঁইয়া আশ্বাস দিয়েছিলেন ইনিস্টিটিউটের অধীনে হলেও তারা সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন কিন্তু এক বছরপার হলেও তারা নূন্যতম কোনো সুযোগ সুবিধা পাননি। বিভাগটির নিজস্ব শিক্ষক,ক্লাসরুম,ল্যাবরুম কিছুই নেই। এমনকি কেউ ইনিস্টিটিউটের পরিচালকের দায়িত্বও গ্রহণ করতে চাননা। সুযোগ সুবিধার অভাবে চলতি শিক্ষাবর্ষে ইনস্টিটিউটে ভর্তি কার্যক্রম ও বন্ধ রাখা হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিটি সেমিস্টার ছয় মাসে শেষ করার কথা থাকলেও শিক্ষকের অভাবে তাদের প্রথম সেমিস্টার শেষ করতে প্রায় দশমাস সময় লেগেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি উপাচার্য ড.মোঃ শাহজাহান জানান,"অবকাঠামো সহ পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত হওয়ার পর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে এমন শর্তে ইনিস্টিটিউটটির অনুমোদন দিয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। কিন্তু সাবেক উপাচার্য নূন্যতম সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত না করেই ইনিস্টিটিউটের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে যার ফলে এধরণের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।"
উপাচার্য জানান, "তাদের অবস্থা দুঃখজনক, কিন্তু এই অবস্থা নিরসনে যেসকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন সেগুলো চলতি উপাচার্য হিসেবে আমার ক্ষমতার বাইরে।"
উল্লেখ্য,বশেমুরবিপ্রবির অধীনে তৃতীয় ইনিস্টিটিউট হিসেবে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং (বিভাগ) এবং ইলেকট্রনিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইন্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ নিয়ে শিবচরে যাত্রা শুরু করে শেখ হাসিনা আইসিটি ইনস্টিটিউট। শিবচরে কোনো ধরনের অবকাঠামো না থাকায় ২০১৯ এর ডিসেম্বরে শিক্ষার্থীদের গোপালগঞ্জের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করা হয়।
বর্তমানে ইনস্টিউটটির অধীনে সিএসই তে ৫৯ জন এবং ইইইতে ২৭ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত রয়েছে।