ভর্তি জালিয়াতির প্রতিকার চেয়ে ইউজিসিতে আবেদন শিক্ষকদের

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোরি) ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত না পেয়ে এবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন শিক্ষকরা। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ডাকযোগে ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর ‘সচেতন শিক্ষকবৃন্দ’ নামে এ আবেদন করেন তারা।

আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় মিশকাতুল জান্নাত নামের এক শিক্ষার্থী দুটি ইউনিটে ফেল করে ‘বি’ ইউনিটে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সেই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষকের ছোটবোন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক খবর প্রকাশিত হয়েছে।

আরও উল্লেখ করা হয় ‘সচেতন শিক্ষকবৃন্দ’র লিখিত দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই শিক্ষার্থীর ভর্তি স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ওই তদন্ত কমিটিতে একজন জুনিয়র শিক্ষককে (সদ্য যোগদান করা প্রভাষক) সদস্য সচিব করা হয়েছে।

বিদ্যমান তদন্ত কমিটির পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য, সাংবিধানিক পদধারী পদস্থ কর্মকর্তা কিংবা প্রখ্যাত শিক্ষাবিদদের দ্বারা একটি কমিটি গঠনের আবেদন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর আবেদনও করেছিল ‘সচেতন শিক্ষকবৃন্দ’। একই সাথে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখারও দাবি জানিয়েছিল।

সচেতন শিক্ষকবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেছেন ‘আমরা (শিক্ষকরা) আশঙ্কা করছি যদি অন্যায় সংঘটিত হয়ে থাকে তাহলে শুধু একজনের ক্ষেত্রে না ঘটে তা অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সচেতন শিক্ষকবৃন্দের দাবি আমলে না নেওয়ার কারণে তারা এবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।

শিক্ষকদের করা আবেদনের অনুলিপি শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা উপমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। ইতোপূর্বে উপাচার্য বরাবর দেওয়া দুটি আবেদনপত্র এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের কপিও যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির সুমন, সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ, নীল দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলাল উদ্দীন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অনার্স প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’ এবং ‘এফ’ ইউনিটে ফেল করেও ‘বি’ ইউনিটের সর্বোচ্চ রেকর্ড নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ইমরানা বারীর ছোটবোন মিশকাতুল জান্নাত।

পরে অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দফতরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মো: নুর আলম সিদ্দিককে আহবায়ক  করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

এতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক সানজিদ ইসলাম খানকে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব করার ঘটনায় সচেতন শিক্ষকরা তীব্র নিন্দা জানান। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হলেও এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ