সাত কলেজ নিয়ে ট্রল: চটলেন ঢাকা কলেজ শিক্ষক

আদনান হোসাইন
আদনান হোসাইন  © টিডিসি ফটো

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাবির সাথে সাথে এর অধিভুক্ত সাত কলেজ, সকল মেডিকেল কলেজ এবং হোম ইকোনোমিকস কলেজের সমাবর্তনও ছিল।

সমাবর্তন উপলক্ষে পুরাতন বিতর্ক নতুন করে চাঙ্গা হয়েছে। অধিভুক্ত কলেজগুলোর ছাত্রছাত্রীরা কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করবে সেটা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। এই প্রেক্ষিতে উঠে আসছে কিছু অদ্ভুত কথা। যেমন, অধিভুক্ত কলেজগুলোর ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস না করে, ঠিকমত পরীক্ষা না দিয়ে সার্টিফিকেট পায়! গত দু’বছরে এই বিষয়টি নিয়ে কিছু বলিনি, কিন্তু আজ কিছু বলতে ইচ্ছে করছে।

প্রথমত, অধিভুক্তি একেবারেই নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সিদ্ধান্ত। এতে সাত কলেজের ছাত্রছাত্রী বা প্রশাসনের কোন ভূমিকা ছিল না। সাত কলেজসহ সকল সরকারি কলেজে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা কর্মরত (কর্মকর্তা শব্দে অনেকের আপত্তি থাকতে পারে, তবে সরকার আমাদের নিয়োগপত্রে এই শব্দটিই ব্যবহার করেছে)। সেখানে সাত কলেজের পাঠদানরতদের সাথে অন্য কোন কলেজের পার্থক্য করার সুযোগ নেই। তাই সরকারি অন্য কলেজগুলোর সমস্যাবলী সাত কলেজেও আছে।

তবে অধিভুক্তির পর একাডেমিক কড়াকড়ি বেড়েছে। তাই ক্লাস না করলে পরীক্ষায় বসতে দেয়া হচ্ছে না, মৌখিক পরীক্ষায় কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। আর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা সমাবর্তনে অংশ নিয়েছে তাদের নিজেদের ক্যাম্পাসে। আমরা সাত কলেজের শিক্ষকরাও কোনদিন আলাদা মর্যাদা দাবি করিনি কারণ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের অংশ হিসেবেই আমরা খুশি।

ঢাবি বা অন্য বহু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সাত কলেজ নিয়ে যেসব ট্রল করছে সেটা আসলে দুর্ভাগ্যজনক। কারণ যদি অধিভুক্তির কারণে কোন সমস্যা হয়ে থাকে তবে সেটার জন্য সাত কলেজের কেউ দায়ী নয়। সেটার সমাধান মনে হয় ঢাবি প্রশাসন ভাল দিতে পারবে। আর এসব কলেজের একাডেমিক মান নিয়ে যদি প্রশ্ন থাকে তবে বলব যে কেন এসব প্রতিষ্ঠানের পড়াশোনার মান খারাপ হয়ে গেল? যার মধ্যে আছে তিনটি শতবর্ষী কলেজ, সেই প্রশ্নটিও করা দরকার। কারণ এই সাতটি কলেজ যার মাঝে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যার দিক থেকে দুনিয়ার অন্যতম বৃহৎ কলেজটিও আছে, আছে দেশের প্রাচীনতম কলেজটি, সেই কলেজগুলোর একাডেমিক উন্নতি বাদ দিয়ে দেশের উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়নের কথা ভাবা যায় কি না সেটাও ভাবা দরকার।

সবশেষে আবার বলব,সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আর যাই হোক, কোন রকম ট্রল ডিজার্ভ করে না। আর ঢাবি পরিবারবহির্ভূত কেউ সমাবর্তনকেন্দ্রিক ট্রল করলে বলব, আপনাদের প্রতিষ্ঠানের সমাবর্তনকে সফল করুন, অন্যেরটা নিয়ে না ভাবলেও চলবে।

ফেসবুক থেকে সংগৃহিত

লেখক: আদনান হোসেন, শিক্ষক ইংরেজি বিভাগ, ঢাকা কলেজ।


সর্বশেষ সংবাদ