দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় অধ্যাপক এক্রামের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি!
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ০২:১৪ PM , আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ০২:১৪ PM
দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এক্রাম উল্যাহর বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন দাবি করছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির অপসারণসহ ছয় দফা দাবিতে করা মানববন্ধনে এ দাবি করেন তারা।
আজ মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১১ টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে জড়ো হয়। এরপর ‘সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে শিক্ষার্থীদের র্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে মিলিত হয়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আবু হাশেম বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় স্যারের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা এ কমিটির অপসারণ চাই। প্রশাসনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আমরা শুধু চাই স্যার যেন স্বাভাবিকভাবে আমাদের বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে পারেন।’
মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুর রহমান। মানববন্ধনে তদন্ত কমিটি অপসারণ করা না হলে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
দাবিগুলো হল- দুইদিনের মধ্যে অধ্যাপক এক্রাম উল্যাহ’র বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির অপসারণ, দুর্নীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন প্রতিষ্ঠা, ক্যাম্পাসের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধকরণ, দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বিনা কারণে কাউকে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক এক্রাম উল্যাহর বিরুদ্ধে ৯ অক্টোবর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে’ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে বহিরাগত আনার অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মশিউর মেহেদীর উপর ছিনতাইকারীর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১২ টায় চারুকলা অনুষদের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের বাইরে হওয়ায় চারুকলা ও কৃষি অনুষদের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শঙ্কাজনক। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারুকলায় যেতে পুলিশ ফাঁড়ি দেয়া থাকলেও আশেপাশের এলাকা থেকে চারুকলায় ঢুকতে সে ধরণের কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।
ফলে স্থানীয় বখাটেরা সন্ধ্যা হলেই উৎপাত শুরু করে। কোন কারণ ছাড়াই স্থানীয় তিন বখাটে মেহেদীর কাছে থাকা ১৫০০ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে। তাদের আঘাতে চোখের কোণায় মারাত্মক জখম হয়েছে চারুকলা অনুষদের ওই শিক্ষার্থীর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে যাওয়া রেললাইন রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানা এবং চন্দ্রিমা থানার সীমানা নির্দেশ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ অংশ মতিহার থানার অধীনে থাকায় শুধু চারুকলা ও কৃষি অনুষদ কেন্দ্রীক চন্দ্রিমা থানাকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এর সাথে সম্পৃক্ত রাখতে হয়।
তবে তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে চারুকলা অনুষদের জন্য আলাদা পুলিশ ফাঁড়ির ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া মেহেদীর উপর হামলাকারীদের আজ (৫ নবেম্বর) রাতের মধ্যে গ্রেফতার করা হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।