নামসর্বস্ব ল্যাবে চলছে কুবির আইসিটি বিভাগ, সেশনজটে শিক্ষার্থীরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগে সাতটি ব্যাচ চলমান থাকলেও তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে একটিমাত্র শ্রেণিকক্ষ। আর ৪২টি কম্পিউটার নিয়ে একটি ল্যাবরুম থাকলেও তা কোনো কাজে আসছে না। এতে ল্যাব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। একইসাথে সেশনজটও বাড়ছে বিভাগটিতে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বিভাগটিতে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট সাতটি ব্যাচ চলমান। প্রতিটি ব্যাচে প্রতি সেমিস্টারে অন্তত ১১ থেকে ১৩টি কোর্স অধ্যয়ন করতে হয়। কিন্তু বিভাগটির জন্য শ্রেণিকক্ষ বরাদ্দ রয়েছে মাত্র একটি। এক ব্যাচ ক্লাসে গেলে অন্য ব্যাচগুলোকে বাইরে অপেক্ষা করতে হয়। এতে, রুটিন অনুযায়ী ক্লাস নিতে পারছে না বিভাগের শিক্ষকরা। এরফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্লাস শেষ না হওযায় সেমিস্টার শেষ করতেও বিলম্ব হচ্ছে।

জানা যায়, বিভাগটির ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ ২০১৭ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করার কথা থাকলেও তারা কিছুদিন আগে স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষা শেষ করেছেন। অন্য ব্যাচগুলোতেও সেশনজটের ভয়াবহতা প্রকট। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্লাসের অপেক্ষায় অনেক সময় নষ্ট হয় আমাদের। ক্লাসের জন্য এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে এমন বহু ঘটনা আছে। এমনও হয়েছে, কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ক্লাস না হওয়ায় ফিরে যেতে হয়েছে। ’

ল্যাবরুম ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায় অনুষদের তৃতীয় তলায় অবস্থিত ল্যাবরুমটি শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ক্লাসের সুবিধার্থে বিকল কয়েকটি মনিটর টেবিলের নিচে রাখা। বর্তমানে কক্ষটিতে ২৫টি কম্পিউটার রয়েছে যার সব কটিই বিকল। বাকি ১৭টি কম্পিউটার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টোরে পাঠানো হয়েছে। কম্পিউটার নির্ভর একটি বিভাগের ল্যাবে ব্যবহার উপযোগী কম্পিউটার না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের ল্যাবের কম্পিউটারগুলো বহুদিন ধরেই নষ্ট। আইসিটি অনেকটা কম্পিউটার নির্ভর বিভাগ। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা ব্যবহারিক কাজগুলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ’

আইসিটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের আন্তরিকতা রয়েছে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ না থাকায় সেশনজট থাকলেও কমিয়ে আনতে পারছি না। ল্যাবের জন্য ৫০টি কম্পিউটার আমাদের দেওয়া হয়েছে। সেগুলো স্টকে আছে। প্রকৌশল অনুষদের ভবনে আমাদের রুম দেওয়া হলে সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব। ’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, ‘দুটি বিভাগের জন্য ৯৫ লাখ টাকার কম্পিউটার কেনা হয়েছে। অ্যাকাডেমিক ভবন-৪-এর কক্ষগুলো এ মাসের ১২ তারিখ আমাদের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় নিয়েছে। ওখানে স্থানান্তর হলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। ’


সর্বশেষ সংবাদ