বিএম কলেজ ছাত্রাবাসে অভিযান, ৩ কক্ষ সিলগালা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৫৮ PM , আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯, ০৭:৫৮ PM
মাদক নির্মূল, বহিরাগত তাড়ানো এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ প্রশাসন। গত শনিবার রাত ১১টার পর ৩টি ছাত্রাবাসে পর্যায় ক্রমে অভিযান চালানো হয়। এ সময় একটি ছাত্রাবাসের ৩টি কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হয়।
অভিযান চালানো ৩টি ছাত্রাবাস হলো অশ্বিনী কুমার হল, ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক হল (মুসলিম হল) এবং জীবনানন্দ দাশ হল (হিন্দু ছাত্রাবাস)। ছাত্রাবাস ৩টিতে মাদকসেবী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অবস্থান করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শফিকুর রহমান সিকদারের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর কবির জানান, অভিযান চালানো ৩টি ছাত্রাবাসের একাধিক কক্ষ দখল করে বহিরাগতরা মাদক ও জুয়ার আসর বসায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এর প্রেক্ষিতে শনিবার রাত ১১ টা থেকে ২টা পর্যন্ত ছাত্রাবাসগুলোতে কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে অভিযান চালানো হয়েছে। প্রথমে অভিযান চালানো হয় অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাসে। এ সময় ছাত্রাবাসটির ‘এ’ ব্লকের ৩০১ ও ৩১০ এবং ‘বি’ ব্লকের ২১৫ নম্বর কক্ষে কাউকে পাওয়া যায় নি। এ কারণে তাৎক্ষণিক ওই তিনটি কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। ওই তিনটি কক্ষের বাসিন্দারা কেন কক্ষে ছিল না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কক্ষ তিনটি পরবর্তীতে খুলে দেওয়া হবে কিনা সেটা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।
অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাসের পরপরই অভিযান চালানো হয় ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক হল (মুসলিম হল) ও জীবনানন্দ দাশ (হিন্দু হল) হলে। তবে এ দুটি হলের কোন কক্ষে আপত্তিকর কোনকিছু পাওয়া যায়নি বলে কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শফিকুর রহমান সিকদার বলেন, ওই তিন ছাত্রাবাসের বিভিন্ন কক্ষে নানা রকম অনিয়মের অভিযোগ পাওয়ার পর শনিবার রাতে অভিযান চালানো হয়। তিনটি ছাত্রাবাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় কোন প্রকার বিঘ্ন না ঘটে এবং প্রভাব খাটিয়ে কেউ ছাত্রাবাসের কোন কক্ষ দখল করতে না পারে।
এদিকে বিএম কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাধিক সূত্র জানায়, অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাসের ৩০১ নম্বর কক্ষ দখল করে কলেজের এক ছাত্রলীগ নেতা মাদক ব্যবসা চালাতো। ২১৫ নম্বর কক্ষটি দখলে রেখেছিলো জেলা ছাত্রলীগের এক সহ-সভাপতি। এ কক্ষটিতে (২১৫) মাদকের আড্ডা ও জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের ।
অপরদিকে ফজলুল হক ছাত্রাবাস ও জীবনানন্দ ছাত্রাবাসেরও একাধিক কক্ষ কথিত ছাত্রলীগ নেতাদের দখলে থাকার অভিযোগ ছিল। তবে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের পর সারা দেশের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রাবাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান শুরু করলে বিএম কলেজের ওই তিন ছাত্রাবাসের কক্ষগুলোর দখল ছেড়ে দেন কথিত ছাত্রলীগ নেতারা।