কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

টেন্ডার জটিলতায় উত্তরপত্র সংকট, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

  © ফাইল ফটো

পরীক্ষার উত্তরপত্র শেষ হয়ে যাওয়ায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের(কুবি) বেশ কয়েকটি বিভাগে নিয়মিত পরীক্ষাগুলো নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। নতুন অর্থবছরের উত্তরপত্র ক্রয়ের টেন্ডার নিয়ে জটিলতা থাকায় এ সংকট তৈরী হয়েছে বলে জানা যায়। তবে দুই-তিনদিনের মধ্যে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করা হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার(অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগেই অন্তত ছয়টি ব্যাচ চলমান। বিভাগগুলোতে প্রতি সেমিস্টারে প্রায় ৩৬০০ উত্তরপত্র প্রয়োজন শুধু মিডটার্ম পরীক্ষা নেওয়ার জন্য। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে উত্তরপত্র দেওয়া হয় ২০০-৫০০ টি করে। যা নিয়মিত পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাঁধার সৃষ্টি করে।

এদিকে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ক্রয়কৃত উত্তরপত্র অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। নতুন অর্থবছরের (২০১৯-২০) তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখনও উত্তরপত্র ক্রয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। উত্তরপত্র ক্রয়ের টেন্ডার আহ্বান করা হলে সেখানে মাত্র একটি কোম্পানি অংশগ্রহণ করে। দাম বেশী হওয়ায় পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করবে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর পরীক্ষার উত্তরপত্র না পেয়ে দোকান থেকে কাগজ কিনে মিডটার্ম পরীক্ষা দিয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের ৮ম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘গত বুধবার আমাদের মিডটার্ম পরীক্ষা ছিল। কিন্তু পরীক্ষা দিতে গিয়ে শুনতে পাই যে বিভাগে মিডটার্মের উত্তরপত্র নেই। পরবর্তীতে আমরা দোকান থেকে কাগজ কিনে পরীক্ষা দিয়েছি।’

আরও বেশ কিছু বিভাগে পরীক্ষার উত্তরপত্রের সংকট রয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইসিটি বিভাগের এক শিক্ষক বলেন, ‘আমাদের বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) একটি ব্যাচের মিডটার্ম পরীক্ষা ছিল, কিন্তু উত্তরপত্রের অভাবে পরীক্ষাটি নিতে পারিনি।  এমনিতেই আমাদের ক্লাসরুম সংকট তার মধ্যে আবার নিয়মিত পরীক্ষাগুলো নেওয়ায় এমন সমস্যা হচ্ছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. শামিমুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকদিন ধরে শুনছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তরপত্র সংকট রয়েছে। নতুন উত্তরপত্র ক্রয় প্রক্রিয়া নিয়ে একটু সমস্যা হওয়ায় সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। তাই বিভাগগুলো চাহিদা অনুযায়ী উত্তরপত্র পাচ্ছে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ নূরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘নতুন অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ উত্তরপত্র আমরা এখনও পাইনি। শুনেছি উত্তরপত্র ক্রয়ের টেন্ডার নিয়ে কোন একটা সমস্যা হয়েছে। আমরা সাময়িক এ সমস্যা সমাধানের জন্য মিডটার্মের উত্তরপত্র মুদ্রণ করে বিভাগগুলোতে সরবরাহ করি। তাই তাদের চাহিদা অনুযায়ী উত্তরপত্র দিতে পারছি না। তবে আমরা চেষ্টা করি যেন কোন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে সমস্যা না হয়।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমাদের উত্তরপত্র সংকট রয়েছে। টেন্ডারে মাত্র একটি কোম্পানি এসেছে। তাও অনেক দাম। পুনরায় টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি আগামী ২/৩ দিনের মধ্যেই দেয়া হবে। সাময়িক সমস্যা উত্তোরণের জন্য প্রতি সপ্তাহে ২৫ হাজার টাকার উত্তরপত্র এনে তা সরবরাহ করা হচ্ছে।’


সর্বশেষ সংবাদ