কুবিতে সাপ আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা
- শাহাদাত বিপ্লব, কুবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:১৪ AM , আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১০:১৪ AM
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে(কুবি) দিনদিন বেড়েই চলছে পাহাড়ি সাপের উপদ্রব। আবসিক হল, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে সাপের উপদ্রব বাড়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আবাসিক হলে কার্বলিক এসিডের বোতল থাকলেও সেগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ায় সেগুলো কোনো কাজে আসছে না। কিছু বোতলে উইপোকা বাসা করে আছে।
লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে গড়ে উঠা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোটা ক্যাম্পাসে জুড়েই রয়েছে উচু নিচু পাহাড়ি টিলা। এসব টিলার চারপাশ ঘন ঝোপঝাড়ে আচ্ছন্ন। প্রচন্ড গরমে এবং বৃষ্টি হলে ঝোপঝাড় থেকে পাহাড়ি বিষধর সাপ বেরিয়ে আসে। এছাড়া ক্যাম্পাসের বদ্ধ ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় নোংরা পরিবেশে বাড়ছে পাহাড়ি বিষধর সাপের উপদ্রব। প্রায়ই ড্রেনগুলোতে সাপ দেখা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, প্রশাসনিক ভবনের নিচতলা, রেজিস্ট্রার দপ্তর এবং ক্যাফেটেরিয়া থেকে গত কয়েক মাসে প্রায় ডজনখানেক সাপ মারা হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের নিচ তলা এবং তিনতলায় দুটি বিষধর সাপ মারেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা জানান, হলে কার্বলিক এসিড ভালোভাবে না ছিটানোয় সাপের উপদ্রব বাড়ছে। প্রায় সময়ই হলে সাপ দেখা যায়। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ হলে অবস্থানরত ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘সেদিন রাত দেড়টার দিকে ওয়াশরুমের পাশে আমরা প্রায় সাড়ে তিন ফিটের একটি সাপ দেখতে পাই। দেখে অনেক বিষাক্ত মনে হয়েছিল। পরে আমরা বন্ধুরা মিলে সাপটিকে মেরে ফেলি। প্রশাসনের উচিত দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা।’
এদিকে গত মে মাসে কাজী নজরুল ইসলাম হলের ২০৩নং রুমে একটি বিষধর সাপ মারেন শিক্ষার্থীরা। হলটির বদ্ধ ড্রেনে প্রায়ই সাপ চলাচল করতে দেখা যায়। এ হলে সাপের উপদ্রব ঠেকাতে ওয়াশরুমের পাশে কার্বলিক এসিডের বোতল ঝুলানো দেখা গেলেও কিছু বোতলে উইপোকার বাসা দেখা যায়। আবার অনেক বোতলেরই মেয়াদ নেই। এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ এরশাদুল আলম বলেন, ‘হলে নতুন কার্বলিক এসিডের বোতল দেয়া হয়েছে। কিছু আছে হয়তো মেয়াদ শেষ, সেগুলো আমরা নতুন করে দিব।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘প্রতি বছর এই সময়ে সাপের উপদ্রব বাড়লেও এ নিয়ে প্রশাসনের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। ঝোপঝাড় অপরিষ্কার এবং ড্রেনগুলো আবদ্ধ থাকলে সাপের উপদ্রব ঠেকানো যাবেনা। আর কার্বলিক এসিডের বোতলগুলোও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেখাশুনা করা হয়না।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ মো: জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘আমরা দেড় মাস পর পর হল প্রশাসনের উদ্যোগে কার্বলিক এসিড ছিটিয়ে দিই। এছাড়া ঝোপঝাড় নিয়মিত পরিষ্কার করার কারণে এ হলে সাপের উপদ্রব নেই।’
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া বলেন, ‘হলে কার্বলিক এসিড দিয়েছি। ঝোপঝাড় পরিষ্কারের কাজ চলছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার(অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো: আবু তাহের বলেন, ‘আমি এস্টেট শাখাকে বলে দিয়েছি দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য। এর জন্য আলাদা বাজেট প্রয়োজন হলে সেটারও ব্যবস্থা করা হবে।
এস্টেট শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে কার্বলিক এসিড দেয়া হবে। তবে হলগুলোতে হল প্রশাসনের জন্য আলাদা বরাদ্দ আছে। সেটা তারা দেখাশুনা করবে।’