বঙ্গবন্ধু পরিষদ নেতার রুম ভাংচুর নিয়ে ধুম্রজাল
- সৌম্য সরকার, বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:৪৫ PM , আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:৪৫ PM
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানের রুম ভাংচুর নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) একই বিভাগের সেকশন অফিসার আনোয়ার হোসেন মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরের দিন ঐ শিক্ষকের রুম ভাংচুরের ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। তবে ঘটনার একদিন পেরিয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষকই মুখ না খোলায় এ নিয়ে ক্যাম্পাসে চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।
নিরাপত্তা প্রহরী শরিফুল ইসলাম জানান, বুধবার আনুমানিক রাত ১০ টায় মশিউর রহমানসহ আরোও একজন একাডেমিক ভবন (০২) এর দ্বিতীয় তলায় মশিউর রহমানের ব্যক্তিগত অফিসকক্ষে যান। তার কিছুক্ষণ পর তারা বের হয়ে চলে যান। তারা চলে গেলে আমি প্রধান গেট তালা দিয়ে ঘুমাতে যাই। তারপর থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত আর কেউ ভবনে আসেনি। সকাল ৮ টায় আরেক নিরাপত্তা প্রহরী জাহাঙ্গীর আসলে শরিফুল চলে যান। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর জানান, সকাল ৮ টার কিছুক্ষণ পর ভবনে আসেন গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমান। এর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর মশিউর রহমান নীচে আসেন এবং আমাকে ডেকে নিয়ে ওনার রুম ভাংচুর দেখান। বিষয়টি সাথে সাথে তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাই।
এদিকে সকাল ৯ টার দিকে শিক্ষক মশিউর রহমান তার ফেইসবুক টাইমলাইনে নিজ কক্ষ ভাংচুরের ছবি দিয়ে স্ট্যাটাসে লেখেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি, রাজাকার, আলবদরের বংশধর ও বিএনপি-জামাত-শিবিরের হামলা আমার রুমে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে ক্যাম্পাসে জামাত-শিবির বা ছাত্রদলের কোনো কার্যক্রম নেই। সিসি ফুটেজ দেখলেই বুঝা যাবে বিষয়টি কারা ঘটিয়েছে।
রুম ভাংচরের বিষয়ে দুপুরের দিকে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগপত্রে শিক্ষক মশিউর রহমান উল্লেখ করেন, ৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার) দুপুর ১টায় ব্যক্তিগত অফিসক্ষ ত্যাগ করেন এবং পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় অফিসে এসে নিজ কক্ষটি ভাংচুর অবস্থায় দেখতে পাই।
এবিষয়ে মশিউর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, 'ক্লাশে কারাগারে রোজনামচা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনী পড়ানোর কারণে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি, জামাত-শিবিরের হুমকি আমি পেয়েছি। একাত্তরের পরাজিত সৈনিকরাই উদ্দ্যেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাকে থামাতে আমার রুম ভাঙচুর করেছে। রাজশাহীতে ছাত্রশিবিরের হেডলিস্টে ছিলাম এখনো আমি আশঙ্কায় আছি।'
এ বিষয়ে প্রক্টর আতিউর রহমান (চলতি দায়িত্ব) জানান, 'বিষয়টি সন্দেহজনক। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে রাত ১০টার দিকে মশিউর রহমানসহ আরেকজনকে প্রবেশ করতে দেখা যায় এবং পরের দিন সকাল ৮ টা পর্যন্ত অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেখা যায়নি। সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তাপ্রহরীকে ফাকি দিয়ে ঐ ভবনে প্রবেশ করা সম্ভব কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যেহেতু ওই ভবনে প্রবেশের জন্য একটি মাত্র গেইট রয়েছে এবং গেটকে কেন্দ্র করেই সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে তাই এটা অনেকটাই অসম্ভব। বিষয়টি সেন্সেটিভ হওয়ায় উপাচার্য মহোদয়কে জানানো হয়েছে তার সাথে আলোচনা করে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।'
এ বিষয়ে তাজহাট থানার ওসি রোকোনুজ্জামান রোকন বলেন,' ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি সত্য কিনা উদ্দেশ্যপ্রণোদীত তা সিসি ফুটেজ ও অন্যান্য আলামতের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।