বহিরাগত ও মাদকমুক্ত শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস চায় ছাত্রলীগ
- এ আর রাশেদ, ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০১৯, ০৮:৪১ PM , আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০১৯, ০৯:৩১ PM
দীর্ঘ ৮ মাস ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত থাকার পর গত ১৪ জুলাই দুই সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটির অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে সভাপতি হয়েছে রবিউল ইসলাম পলাশ এবং সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
নতুন কমিটি দায়িত্বগ্রহনের পর ইবি ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে একটি শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গঠনের অঙ্গীকার করেছেন তারা। এসব বিষয় নিয়ে সম্প্রতি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব। সাক্ষাতকার নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক এ আর রাশেদ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনিত হওয়ায় আপনাকে অভিনন্দন।
রাকিবুল ইসলাম রাকিব: ধন্যবাদ।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দীর্ঘ আট মাস পর নতুন কমিটি হয়েছে। এখন ক্যাম্পাস নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চাই...
রাকিবুল ইসলাম রাকিব: ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত থাকার পর গত ১৪ জুলাই নতুন কমিটির সূচনা হয়েছে। নতুন কমিটি ক্যাম্পাসে এসেই প্রথমে মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। যেটি চলমান রয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে আমরা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিভিন্ন বার্তা পৌঁছে দিয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীরা একটি সুন্দর, সুশৃংঙ্খল ও শিক্ষাবান্ধব সবুজ ক্যাম্পাস পায়। যেখানে থাকবেনা বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য, থাকবেনা মাদক, ইভটিজিং ও র্যাগিংয়ের মতো কোন আচারণ। ইবি ছাত্রলীগ সবসময় শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কাজ করতে চাই। সে লক্ষে ইতোমধ্যে হল কেন্দ্রিক শিক্ষার্থীদের সমস্যা নিয়ে কিছু কর্মসূচী আমরা হাতে নিয়েছি।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: যেহেতু দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি হয়েছে এখন কমিটি পূর্নাঙ্গ করার পালা। এক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে কাদেরকে অগ্রাধিকার দিবেন বা কারা কমিটিতে অগ্রাধিকার পাবে?
রাকিবুল ইসলাম রাকিব: বিগত কমিটির ন্যায় নতুন কমিটি ক্ষমতা এককেন্দ্রিককরণে বিশ্বাসী না। তাই আমরা আমাদের সকল কর্মীদের সহযোগীতা চেয়েছি। তাদের সহযোগিতা পেলেই অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি পূর্নাঙ্গ করা হবে। সে লক্ষে আমরা কাজ করছি। আমরা বিগত কমিটিতে দেখেছি তারা ক্যাম্পাসকে শিবিরমুক্ত ঘোষণা করেছে। কিন্তু তারপরও তাদের মধ্যে কিছু অনুপ্রবেশকারী রয়েছে। আমরা এই অনুপ্রবেশকারীদেরকে বিতাড়িত করে যারা ত্যাগী-পরিশ্রমী ও জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে যাদের শক্ত অবস্থান তাদেরকে কমিটিতে স্থান দিতে চাই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ইবি ক্যাম্পাসে সবসময় স্থানীয় রাজনীতির একটা প্রভাব রয়েছে। এর ফলে ক্যাম্পাসে প্রায় সবসময় বহিরাগতদের আনাগোনা দেখা যায়। বিষয়টা আপনাদের কাছে কতটুটু ইতিবাচক? বা এনিয়ে আপনাদের ভাবনা কি?
রাকিবুল ইসলাম রাকিব: ইতোপূর্বের কমিটিগুলো লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন সেখানে স্থানীয় দুই জেলার (কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ) রাজনৈতিক একটি প্রভাব ছিল। কিন্তু নতুন এই কমিটিতে সেটি নেই। আমরা ইবি ছাত্রলীগের রাজনীতিটাকে একটি ব্রান্ড করতে চাই। যেটিতে এই দুই অংশের কোন প্রভাব থাকবে না। তবে সাংগঠনিক স্বার্থে আমরা স্থানীয় সবার সহযোগীতা নিয়ে কাজ করতে চাই। আর বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু একটি বিশ্বমানের জায়গা, সেহেতু এখানে শুধু স্থানীয়রা না এর বাইরের শিক্ষার্থীরাও রাজনীতি করবে। আর আমরা সেই সুযোগটা দিতে চাই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিগত সময়ে আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা ছাত্রলীগের উপর বিস্তর প্রভাব খাটায়। এই কমিটিতে কতটুটু সুযোগ আছে?
রাকিবুল ইসলাম রাকিব: ছাত্রলীগের উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিদের যে প্রভাব, আমি মনে করি বর্তমানে সেটি নাই। ইতোপূর্বে ছিল কিনা আমার জানা নেই। এই কমিটিতে আমরা চেষ্টা করবো আমাদেরকে সবসময় একটি নিরোপেক্ষতার জায়গায় রাখতে। কেননা আমরা ছাত্রলীগ এখানে এসেছি ছাত্র-ছাত্রীদের চাওয়া-পাওয়া ও দাবি আদায়ে কাজ করার জন্য। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আছি, থাকবো। প্রশাসনিক কোন কর্তাব্যক্তি যদি আমাদের উপর কোন প্রকার প্রভাব খাটাতে চাই তাহলে আমরা তা কখনোই হতে দিব না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের খাবারের মান বৃদ্ধি ও ফাও খাওয়া রোধে আপনাদের জায়গা থেকে কোন পদক্ষেপ আছে কিনা?
রাকিবুল ইসলাম রাকিব: আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা, খাবারের মান বৃদ্ধি ও ফাও খাওয়া রোধে ইতোমধ্যে বিভিন্ন হলের প্রভোস্ট ও ডাইনিং ম্যানেজারদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারা আমাদেরকে সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন। এখন থেকে ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কেউ হলে বা বাইরের হোটেলগুলোতে ফাও খেতে পারবে না। এরকমটা হলে, সে যেই হোক আমরা তাকে ছাড় দিবো না।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আমরা জানি, ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকার ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলার জায়গা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ। ইবিতে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ গঠন ও নির্বাচন নিয়ে আপনাদের কোন পরিকল্পনা আছে কিনা?
রাকিবুল ইসলাম রাকিব: ছাত্র সংসদ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। শিক্ষার্থীদের অধিকার ও দাবি আদায়ের যে প্লাটফর্ম আমি মনে করি, সেটি ছাত্র সংসদ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এই কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ইকসু) চাই। খুব দ্রুতই শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে কাছে দাবি জানাবো। যাতে করে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি ইকসু গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেন। আশা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ছাত্র সংসদ গঠন ও নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের সাথে একমত পোষণ করবেন।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের উদ্দেশে কোন বিশেষ কি বার্তা দিতে চান...
রাকিবুল ইসলাম রাকিব: সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আমার বার্তা, বিগত দিনের ইতিহাস ভুলে ছাত্রলীগের পতাকা তলে সবাইকে আসার জন্য আমি আহবান জানাবো। ইতিবাচক সকল কাজে ইবি ছাত্রলীগ সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে আছে, থাকবে। এই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ হাজার শিক্ষার্থীদের সুখে দুঃখে পাশে থাকতে চাই।
দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ আমাদেরকে সময় দেবার জন্য।
রাকিবুল ইসলাম রাকিব: আপনাকেসহ ডেইলি ক্যাম্পাস পরিবারের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।