উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি

প্রশাসনিক পদ ছাড়লেন ববির ৫০ শিক্ষক, অনশনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী

আমরণ অনশনে ববির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
আমরণ অনশনে ববির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য প্রফেসর ড. এস এম ইমামুল হকের পদত্যাগ দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রশাসনিক পদ থেকে শিক্ষকদের পদত্যাগের জন্য আহবান জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি। বুধবার শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে এ সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রশাসনিক পদ ছেড়েছেন ৫০ শিক্ষক। তাছাড়া শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া এবং সহ-সভাপতি সরদার কায়ছার আহমেদসহ ৩৮ জনের মতো শিক্ষক-শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে আছেন।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছেন, ‘আজ আমরা কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরী সভা করেছি। সেই সভায় সবার সিন্ধান্ত মোতাবেক আমরা প্রভোস্ট, প্রক্টর, চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তাদেরকে স্ব স্ব পদ থেকে পদত্যাগের আহবান জানিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা শুরুতে আট দফা দাবীতে আন্দোলন করেছি। টানা সাত দিন অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের সঙ্গে কোন রকম যোগাযোগ করেনি। তাই এখন আমাদের একটাই দাবী, উপাচার্যের পদত্যাগ। আজ আমরা বাধ্য হয়েছি এই কঠোর কর্মসূচি দিতে।’

এদিকে, বুধবার সকাল ১০টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় অবস্থান নিয়ে ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরাচারি উপাচার্য প্রফেসর এস এম ইমামুল হকের অপসারণ চেয়ে শিক্ষক- শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। শুরুতে শিক্ষকেরা না বসলেও দুপুরের দিকে শিক্ষদের একটি প্রতিনিধি দল এতে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

আমরণ অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি সিফাত আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবী উপাচার্যের পদত্যাগ। আজ আমরণ অনশনে বসেছি। দরকার হলে না খেয়ে মারা যাবো। তবুও উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবো।’

উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চের চা-চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। একইদিন এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং হল থেকে শিক্ষার্থীদের বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তখন উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরে উপাচার্য এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন। গত ৬ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা সমঝোতা বৈঠক করলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।

১০ এপ্রিল উপাচার্য ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ১৫ দিন ছুটির আবেদন করেন এবং তা মঞ্জুর হয়। তবে শিক্ষার্থীরা এ ছুটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ অবস্থায় উপাচার্য পদত্যাগ কিংবা পূর্ণকালীন ছুটিতে না গেলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ