ববি উপাচার্যকে বিদায়ের প্রস্তুতি নিতে বললেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক

  © ফাইল ফটো

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম ইমামুল হককে বিদায়ের প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ’র (ডাকসু) জিএস গোলাম রাব্বানী। শুক্রবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি এ আহবান জানান। 

গোলাম রাব্বানী ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘স্যার, এবার সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের দারির প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিদায়ের প্রস্তুতি নিন। ওদের আর ক্লাসের বাইরে, রাজপথে রাখবেন না প্লিজ।’

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর
ফেসবুক পোস্ট

টানা ১৯ দিন ধরে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন করছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। টানা আন্দোলনের ফলে কার্যত অচল রয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাহত হচ্ছে পুরো শিক্ষা কার্যক্রম। এর আগেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান এই ছাত্র আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে পূর্বঘোষিত সিন্ধান্ত অনুযায়ী, শনিবার ছুটির দিনেও সকাল ১১টা থেকে প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় অবস্থান কর্মসূচি নিলে দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষকদের একাংশ চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা প্রশন করেন।

এসময় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের একান্ত দায়বদ্ধতা থেকে আজ এখানে এসেছি। তোমাদের ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। মহামান্য রাষ্ট্রপ্রতি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের একান্ত অনুরোধ থাকবে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অচলাবস্থা নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। শিক্ষার স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে দিতে দৃঢ পদক্ষেপ নিন।’

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে

এর আগেও শিক্ষক সমিতি ছাত্রদের চলমান উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আট দফা দাবী আদায়ে ধর্মঘট অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। অবশ্য উপাচার্য ১৫ দিনের ছুটি চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। তবে শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখান করে উপাচার্যের বিদায় চেয়েছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী লোকমান হোসেন জানিয়েছেন, ‘ভিসির পদত্যাগ নয়তো পূর্ণ মেয়াদের ছুটির বিষয়ে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের পথ থেকে পিছু হটার কোনো কারণ নেই। আজ ১৮ দিন ধরে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচি চলছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলবে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৬ মার্চ দুপুরে এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বললে ২৭ মার্চ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

কিন্তু শিক্ষার্থীরা সে নির্দেশ উপেক্ষা করে হলে অবস্থান করেন। পরে উপাচার্য এস এম ইমামুল হক তাঁর মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৬ এপ্রিল রাজনৈতিক নেতা, বিভাগীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকের পর পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জানান, উপাচার্যের পদের মেয়াদ দুই মাস আছে। এই সময় তিনি যাতে আর কর্মস্থলে না আসেন, সে জন্য তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ পাঠাবেন।

এমতাবস্থায় ১০ ই এপ্রিল ব্যাক্তিগতকারণ দেখিয়ে ১৫ দিনের ছুটির জন্য আবেদন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড.এস এম ইমামুল হক। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ বা পূর্ণমেয়াদে ছুটিতে যাওয়ার বিষয়টি লিখিত দেওয়ার দাবিতে এখনো অটল।


সর্বশেষ সংবাদ