১১ মে ২০২৫, ০৭:০৫

ইবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পাশে ছাত্র সংগঠনগুলো

ছাত্র সংগঠনগুলোর সহায়তাকেন্দ্র স্থাপন  © টিডিসি ফটো

গুচ্ছ ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত ২৫ এপ্রিল থেকে। এ উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ও অভিভাবকদের জন্য ভর্তি তথ্য সহায়তাকেন্দ্র স্থাপন ও আবাসনের ব্যবস্থাসহ নানা সেবা নিয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করেই ভর্তি পরীক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যেতে দেখা গেছে একাধিক ছাত্র সংগঠনকে। প্রতিটি বুথে সংগঠনগুলোর নেতারা যাবতীয় সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

আজ শনিবার (১১ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, প্রধান ফটকের উভয় পাশে ইবিতে ক্রিয়াশীল ৭টি ছাত্র সংগঠনের জন্য স্টল বরাদ্দ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এগুলোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে শহীদ আবু সাঈদ তথ্য কেন্দ্র, শাখা ছাত্রদলের শহীদ ওয়াসিম সহায়তা কেন্দ্র ও শহীদ মুগ্ধ পানি কর্নার, ছাত্রশিবিরের হেল্পডেস্ক, ছাত্র ইউনিয়, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ ওসামা হেল্প ডেস্ক, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া ও খেলাফতে মজলিস ভর্তিচ্ছুদের সহায়তায় বুথ স্থাপন করেছে।

আরও পড়ুন : আ.লীগের নিবন্ধন বাতিল নিয়ে যা বলছে এনসিপি

বুথগুলোতে ভর্তি সহায়তা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরীক্ষার্থীদের জন্য শুভেচ্ছাস্বরূপ কলম প্রদান ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থীদের তথ্য সরবরাহ ও সঙ্গে আসা অভিভাবকদের জন্য বিশ্রাম, সুপেয় পানি, শরবতের ব্যবস্থা করা হয়। তীব্র গরমে দূরদূরান্ত থেকে আসা অভিভাবকরা এসব ছাত্র সংগঠনের বুথে বসে বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। এতে পরীক্ষার্থীরা যেমন উপকৃত হয়েছেন, তেমনি অভিভাবকদের মাঝেও ছিল স্বস্তির ছোঁয়া। এ ছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন বই, মোবাইল, ঘড়িসহ ইলেকট্রনিক সামগ্রী জমা রাখার সুবিধাও দেওয়া হচ্ছে।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, ইবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা ভাই-বোন ও তাদের অভিভাবকদের শুভেচ্ছা জানাই। তারা দীর্ঘ একটি সময় ধরে পরিশ্রম করেছে, মহান আল্লাহ তাদের সহায় হোক। ফ্যাসিস্টের সময় আমরা এত আনন্দঘনভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করতে পারিনি। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সব সময় তাদের পাশে আছে।

খেলাফত ছাত্র মজলিশের দায়িত্বশীলরা বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, সুন্দরভাবেই ইবিতে ভর্তিপরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আমরা খেলাফত ছাত্র মজলিশের পক্ষ থেকে সুপেয় ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করেছি এবং অভিভাবকদের বসার স্থানে ফ্যানের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের ফার্স্ট এইড বক্স ছিল, ওষুধ ও স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার।

বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার সেক্রেটারি মো. শামীম বলেন, যে কয়টি সংগঠন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তার মধ্যে তালাবায়ে আরাবিয়া অন্যতম। আমরা শিক্ষার্থীদের ব্যাগ, মোবাইল ফোন, ঘড়িসহ বিভিন্ন জিনিস জমা রাখছি। আমরা  ৫ আগস্টের পর ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে ভালো কাজের যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, আশা করি তা অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুন : ইবির ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতি ৯১ শতাংশ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আজ প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে এসেছে। আমরা পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সর্বাত্মক সাহায্য-সহযোগিতা করছি। আমাদের ফোন নম্বর দিয়ে একটি হেল্প কার্ডের ব্যবস্থা করেছি, যাতে তারা কোনো সমস্যায় পরলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। বিগত বছরের পরীক্ষায় ছাত্রলীগের একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে দেখা যেত এবং পরীক্ষা শেষে একধরনের ন্যক্কারজনক মিছিল শোডাউন করেছিল, যার ফলে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকত। আমরা সেই কালচার থেকে বেরিয়ে একসঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি।

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্থাপিত প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের দায়িত্ব একটু বেশিই রয়েছে। অভিভাবকদের জন্য আমরা শহিদ ওয়াসিম বিশ্রাম কর্নার এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছি। আমরা কলম, জরুরি ওষুধ, ফুল, চকলেট নিয়ে শিক্ষার্থীদের এবং হালকা নাশতা নিয়ে অভিভাবকদের পাশে ছিলাম। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যানজট নিরসন ও পরিচ্ছন্নতার কাজ করছে। সব ভালো কাজের সঙ্গে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সব সময় থাকবে।