জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষক-কর্মকর্তার বেতন বন্ধ

বাঁ থেকে নিউটন হাওলাদার, ড. মোস্তফা কামাল, কাজী মনির, আবু সালেহ সেকেন্দার ও সালাউদ্দিন মোল্লা
বাঁ থেকে নিউটন হাওলাদার, ড. মোস্তফা কামাল, কাজী মনির, আবু সালেহ সেকেন্দার ও সালাউদ্দিন মোল্লা  © সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে অনেক প্রভাবশালী শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি। তাদের কেউ কেউ স্বেচ্ছায় দূরে থেকেছেন, আবার অনেকে প্রশাসনিক তদন্তের মুখে পড়েছেন। ইতোমধ্যে কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নানা অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকজনের বেতন বন্ধ করা হয়েছে।  

জবির সাবেক প্রক্টর ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামালসহ পাঁচজন শিক্ষকের বেতন পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সহকারী প্রক্টর নিউটন হাওলাদার, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু সালেহ সেকেন্দার, জবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. কাজী মনির ও অর্থ দপ্তরের সহকারী পরিচালক সালাউদ্দিন মোল্লা কাদের।  

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু সালেহ সেকেন্দারের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগ থাকায় গত ১৭ নভেম্বর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, যার ফলে তার বেতন আংশিক বন্ধ রয়েছে। তবে বাকিদের ক্ষেত্রে অভিযোগ রাজনৈতিক।  

এছাড়া, আরও পাঁচজন শিক্ষক ও কর্মকর্তার বেতন বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, যার ফলে তার বেতন অর্ধেক বন্ধ রয়েছে। একইভাবে, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগে প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বেতন অর্ধেক বন্ধ রাখা হয়েছে।  

অন্যদিকে, দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোচনা শোভার বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে বিদেশ ভ্রমণের অভিযোগ থাকায় তার বেতন চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। একই বিভাগের আরেক সহকারী অধ্যাপক শামীম আরা পিয়া শিক্ষা ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ফিরে না আসায় গত নভেম্বর থেকে তার বেতন বন্ধ রয়েছে। ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে ডেপুটি রেজিস্ট্রার জিনাত জেরিন সুলতানার বেতন পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে।  

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, “এ পর্যন্ত তিনজন কর্মকর্তা ও দুজন শিক্ষকের বেতন বন্ধ আছে। কয়েকজনকে নিয়ে তদন্ত চলছে, তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন জানান, “কয়েকজনের বেতন বন্ধ করা হয়েছে, তদন্ত চলছে, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”  

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘এ তালিকায় আরও নাম আসবে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়া অনুসারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ