ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পাশে জবি বিএনসিসি, স্কাউট ও রেঞ্জার্স

ভর্তিচ্ছুদের সেবায় বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীরা
ভর্তিচ্ছুদের সেবায় বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীরা  © সংগৃহীত

সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। তবে এই সফল আয়োজনের পেছনে যারা অনন্য অবদান রেখেছেন, তাদের অনেকেই রয়ে গেছেন চোখের আড়ালে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সহায়তায় অসামান্য ভূমিকা রেখেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রেঞ্জার্স, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসি। শেষ দিন পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম ছিল অতুলনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে পরীক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পৌঁছে দেওয়াসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছেন তারা। এই সহযোগিতা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

এ বছর চার ইউনিটে প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছেন। তাদের সঙ্গে অভিভাবক হিসেবে এসেছেন আরও দুই লক্ষাধিক মানুষ। এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিচালনা করা কঠিন হলেও, সামাজিক সংগঠনগুলো অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে।  

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন স্থানে দিকনির্দেশনামূলক সাইনবোর্ড বসানো, পরীক্ষার্থীদের সিট তালিকার ব্যানার লাগানো, শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র খুঁজে পেতে সহায়তা করা, বিলম্বে আসা ভর্তি-ইচ্ছুকদের দ্রুত পরীক্ষার হলে পৌঁছে দেওয়া—এসব দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন রেঞ্জার্স, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসির সদস্যরা। এমনকি অসুস্থ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও বিশেষ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কখনো কখনো অসুস্থ শিক্ষার্থীকে কাঁধে তুলে মেডিকেলে নিয়ে যেতে দেখা গেছে সংগঠনগুলোর সদস্যদের।  

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা এই উদ্যোগের প্রশংসা করে রেঞ্জার্স, রোভার স্কাউট ও বিএনসিসিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।  

রেঞ্জার্স ইউনিটের সভাপতি ফারহানা আক্তার প্রিমা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রেঞ্জার্স ইউনিটের সব সদস্য উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাগত শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আগামীতেও যেকোনো প্রোগ্রামে আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।  

রোভার স্কাউট ইউনিটের ট্রেনিং সম্পাদক মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, গেট থেকে সিট পর্যন্ত শিক্ষার্থীকে পৌঁছে দেওয়া এবং এর মাঝে যদি কোনো সমস্যা হয়, তা সমাধান করাও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা আমাদের করণীয় দায়িত্ব পালন করেছি এবং ভবিষ্যতেও করে যাবো।  

বিএনসিসির ক্যাডেট সার্জেন্ট তৌফিক হোসেন বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সার্বিক শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা কাজ করেছি। জবি বিএনসিসি প্রতিবছরই পরীক্ষার্থীদের সেবা দিয়ে থাকে। আজকের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় মোট ৩০ জন ক্যাডেট দায়িত্ব পালন করেছে। ভবিষ্যতেও আমরা একইভাবে দায়িত্ব পালনের আশা রাখি।  

জবি রেঞ্জার্স ইউনিটের ডিউজি অধ্যাপক ড. আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘এবারের ভর্তি পরীক্ষা ছিল সম্পূর্ণ নতুন পদ্ধতিতে, তিন শিফটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এমন পরীক্ষার আয়োজন কখনো হয়নি। আমাদের শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে নিরলস পরিশ্রম করেছে। আমি অবশ্যই তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতেও তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো প্রোগ্রামে এভাবেই কাজ করবে বলে আশা করি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতায় বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও রেঞ্জার্সের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। প্রক্টোরিয়াল বডির পাশাপাশি তারাই মূল দায়িত্ব পালন করেছেন। সকলের সহায়তায় এবার আমরা সুষ্ঠুভাবে ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছি।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে জবি বিএনসিসি, স্কাউট ও রেঞ্জার্স আবারও প্রমাণ করেছে যে তারা শুধু আনুষ্ঠানিক সংগঠন নয়, বরং মানবিক সহায়তার প্রতীক।


সর্বশেষ সংবাদ