থানা স্থানান্তর না করতে ইবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাস অভ্যন্তরে অবস্থিত ইবি থানা যেন স্থানান্তর করে ঝাউদিয়া না নেওয়া হয় এর দাবিতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন করছেন ক্যাম্পাসের আশপাশের অন্তত ৫টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কে গাছ ফেলে এবং টায়ার পুড়িয়ে অবরোধ করে আন্দোলন করেন স্থানীয় এলাকাবাসীরা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, জমিয়েতে তালাবাসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের পাশাপাশি বিশাল জনসমাগম লক্ষ করা যায়।
আরও পড়ুন: বাকৃবি শিক্ষার্থীকে বারবার বহিষ্কারের অভিযোগ, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন
আন্দোলনকারীরা বলেন, ‘কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র করে আমাদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানাকে আমরা ঝাউদিয়ায় নিয়ে যেতে দেব না। শরীরের শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করে যাব। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা যেমন রক্ত দিয়েছি, দরকার হয় আবার রক্ত দেব। তারপরও আমাদের এই দাবি আদায় করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।’
তারা আরও বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ডিসি বা দায়িত্বশীল কেউ যখন এসে কথা বলবেন, তারপর শর্তসাপেক্ষে এই অবরোধ ছাড়া হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের আশ্বস্ত করা হবে, আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। যদি এর সমাধান না হয় আমাদের লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
ইবি ক্যাম্পাস থেকে থানা স্থানান্তর না করতে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
অবরোধে ছাত্রশিবির ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘এখানে আমাদের ২০ হাজার শিক্ষার্থীসহ আশপাশে লোকজনের নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। আপনারা ঝাউদিয়াতে আপনাদের নিরাপত্তার জন্য থানা চাইতেই পারেন। তবে ইবি থানাকে হস্তান্তর করে নয়। ইবি থানা ইবিতেই থাকবে, এটাই আমাদের স্পষ্ট কথা।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘আজকে আমরা এখানে এলাকাবাসীদের সঙ্গে একত্র হয়েছি একটাই দাবিতে। আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের থানাকে কোথাও স্থানান্তরিত হতে দবে না। আপনাদের যদি ঝাউদিয়ায় থানার প্রয়োজন হয়, তাহলে দরকার হয় ক্যান্টনমেন্ট বানিয়ে নিন। তাও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের থানা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েই থাকবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘আপনারা প্রয়োজনে অন্যভাবে ঝাউদিয়ায় প্রশাসনিক কার্যক্রম অন্যভাবে পরিচালনা করেন, কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যে থানা রয়েছে, তা কোনোভাবেই স্থানান্তর করা যাবে না। এখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত।’
আরও পড়ুন: কুবি ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ
আন্দোলনে উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রাশিদুজ্জামান বলেন, ‘আজকে আমরা একটা বিশেষ দাবিতে এখানে একত্র হয়ে আন্দোলন করছি। আমাদের এখানে অন্তত ৫টি ইউনিয়নের হাজারখানেক মানুষ আজকে একটি দাবিতে এখানে দাঁড়িয়ে আছেন। এই থানাকে ঝাউদিয়া নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা কখনো এই ষড়যন্ত্রকে বাস্তবায়ন হতে দেব না।’
উল্লেখ্য, ২ ঘণ্টা ধরে অবরোধ কর্মসূচি চলমান রয়েছে এবং প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এসে বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করলে এই অবরোধ কর্মসূচি থেকে সড়ে আসবেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।