ঢাবি ও সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছেই
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:২৩ AM , আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:২৩ AM

সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা বেড়েই চলেছে। দু’পক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে আহতও হয়েছে অন্তত আট শিক্ষার্থী। রবিবার ( ২৬ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের সঙ্গে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বাক-বিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে রাত ১১ টায় উপ-উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করতে আসলে ঢাবি শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলক্ষেত সংলগ্ন প্রবেশ পথে এই উত্তেজনার সুত্রপাত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ১ টা ৩০ মিনিট) সাত কলেজ ও ঢাবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজমান। চলছে পর্যায়ক্রমে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় দুই পক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে ইতোমধ্যে আহত হয়েছে অন্তত আট শিক্ষার্থী।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন ৭ জন শিক্ষার্থী। সাত জনের প্রত্যেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে রয়েছেন শামীম, রিপন, ইমতিয়াজ, মনিরুল, ইসমাইল, সাগর ও মাহিন। ঢাকা মেডিকেলের জরুরী বিভাগের ভর্তি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা মাহবুব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে সংঘর্ষে ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাকিব আহত হয়েছেন। নাকে ও মুখে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। জানা যায়, দুই পক্ষের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ থেকে নিবৃত্ত করতে গেলে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত হন রাকিব। এছাড়াও সাত কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস–পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের আহ্বান করব, তারা যেন শান্ত থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলা হবে, আগামীকাল কোনো ক্লাস–পরীক্ষা হবে না।
এদিকে সবাইকে ধৈর্য ধারণের আহবান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, গতকাল সন্ধায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমার অফিসে আলোচনাকে কেন্দ্র করে রাতে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে তা দুঃখজনক। এতে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। আমি বিশ্বাস করি সুষ্ঠু পরিবেশে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে এই ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটবে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে তা প্রশমিত করার জন্য সব পক্ষকে ধৈর্য ধারণ করার জন্য আমি আহবান করছি।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের বাসভবন অবরোধের জন্য আন্দোলনরত সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলক্ষেত সংলগ্ন প্রবেশ পথের বাইরে অবস্থান করলে ভেতরে অবস্থান নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এক পর্যায়ে দু পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা সাইন্সল্যাব, টেকনিক্যাল মোড় অবরোধ করেন। এরপর রাজধানীর তাঁতীবাজারেও অবরোধ করেন তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সাত কলেজের সমস্যা ও ভর্তির আসন সংখ্যা কমানোর বিষয়ে ঢাবির প্রো-ভিসি (শিক্ষা) কাছে গেলে তিনি অশোভন আচরণ করে রুম থেকে বের করে দেন। তিনি বলেন, সাত কলেজের বিষয়ে কিছু জানেন না।