খাবার পানি সংকটে শেকৃবির ‘বিজয় ২৪’ হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা
- শেকৃবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৩ PM , আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৭ PM
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) বিজয়-২৪ হলে দীর্ঘদিন গ্যাস, খাবার পানি এবং নিরাপত্তা সংকটে ভুগছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও বিগত তিন মাস যাবৎ ডাইনিংয়ের অচলাবস্থার জন্য শিক্ষার্থীরা হল প্রশাসনকেই দায়ী করছেন।
জানা যায়, বিজয়-২৪ হলের বি-ব্লকের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই খাবার পানি নিয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। একাধিকবার হল প্রশাসনকে জানিয়েও সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান হয়নি। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের নিজের অর্থায়নে ক্রয়কৃত ফিল্টারের সমস্যা সমাধানেও হল প্রশাসনের গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
হল নির্মাণের শুরু থেকেই সৃষ্ট নিরাপত্তা কর্মীর সংকটও বর্তমান হল প্রশাসন কাটিয়ে উঠতে পারেনি বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। হল প্রশাসনের মাত্র চারজন স্থায়ী নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলে নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। নিরাপত্তা কর্মী সংকটে একাধিকবার শিক্ষার্থীদের সাইকেল,মোবাইল, মানিব্যাগ চুরি হলেও হল প্রশাসন কোনো দায়ভার নেয়নি বলে জানা যায়। সর্বশেষ হল মসজিদ থেকে ছয়টি ফ্যান চুরির ঘটনা ঘটে।
ক্যান্টিনের খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে একাধিকবার বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হওয়ায় ক্যান্টিন ম্যানেজার হলের গ্যাস সংকটকে দায়ী করে। হল ডাইনিংয়ের বাবুর্চিও একই অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় এবং গ্যাসের চুলায় লকড়ি এবং আলাদা সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করতে দেখা যায়। গ্যাস সংকটে ১৬ ডিসেম্বরের খাবার পরিবেশনে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে তাই ক্যান্টিন ম্যানেজারকে সকাল-দুপুর ক্যান্টিন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন হল প্রশাসন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।
খাবার পানি সংকট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ৮০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ফখরুল হাসান বলেন, বি-ব্লকের পানি সংকটের ব্যাপারে একাধিকবার হল প্রশাসনকে অবহিত করলেও তারা ভ্রূক্ষেপ করেনি। এমনকি ফেসবুকে হল গ্রুপে পোস্ট করা হলেও তারা আমলে নেয়নি।
নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে, ৮০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান ইমন বলেন, অন্যান্য হলের তুলনায় বিজয়-২৪ হলে নিরাপত্তা কর্মী এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংখ্যা নেহাতই অপ্রতুল। শীঘ্রই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, বিনা কারণে প্রোভোস্ট রুমে দুইজন কর্মচারীকে দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে। সারাদিনে কোনো কাজ নাই তাদের। অনেক শিক্ষক তাদের ব্যক্তিগত কাজে কর্মচারীদের কাজে লাগাচ্ছেন। খামারেও অনেক কর্মচারী আছে। শুধু কর্মচারী সংকট এই হলে? এতো বড় হলে এত অল্প কর্মচারী দিয়ে চলে?।
ডাইনিংয়ের বাবুর্চি শাহীন জানান, একাধিকবার গ্যাসের সমস্যার ব্যাপারে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ডাইনিং ম্যানেজারের জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক জাহেদুর রহমান জানান, পানির ফিল্টারের মেমব্রেন সপ্তাহে তিনদিন পরিষ্কার করতে হয়। পরিষ্কার না করায় দুই-একদিন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। কালকেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। গ্যাসের সমস্যা একটি জাতীয় সমস্যা। কখনও থাকে, কখনও থাকে না। এটা নিয়ে কিছু করার নেই । নিরাপত্তা কর্মীর জন্য প্রশাসনের কাছে বলা হয়েছে, প্রক্রিয়া চলতেছে। হয়ত আগামী সপ্তাহের মধ্যে পেয়ে যেতে পারি।