কলেজের গাফিলতিতে এবারও রেজিস্ট্রেশন হয়নি ২২ শিক্ষার্থীর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ AM , আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ AM
চাঁদপুরের কচুয়ার সাচার ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এবারও ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ২২ শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন হয়নি। যদিও গত বছরও একই ভুল হয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষের। ওই সময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সান্ত্বনা দিয়ে এ বছর তাদের রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার কথা থাকলেও একই ভুলের পুনরাবৃত্তি জীবন থেকে হারিয়ে গেল শিক্ষার্থীদের দুটি বছর।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, রেজিস্ট্রেশন ফি দিয়েছি, তাহলে কেন আমাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি? আর রেজিস্ট্রেশন না হলে আমাদের কাছ থেকে ফরম পূরণ, বেতন ও রেজিস্ট্রেশনের টাকা নিল কেন? অধ্যক্ষসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যরা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমাদের জীবন থেকে দুটি বছর হারিয়ে যাবে তা মেনে নিতে পারছি না।
বাদ পড়া ২২ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে সাচার ডিগ্রি কলেজে প্রথম বর্ষে ১৪৬ জন শিক্ষার্থী অনলাইনে ভর্তির জন্য আবেদন করেন। পরবর্তীতে কলেজের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের প্রতিনিধি (অফিস সহায়ক) শাহিনা আক্তার শিক্ষার্থীদের ভর্তি সংক্রান্ত আবেদন নিশ্চায়ন করেননি। ফলে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২২ জন শিক্ষার্থী ২০২৩ সালে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিতে এসে জানতে পারেন তাদের প্রবেশপত্র আসেনি। ওই সময় কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মহসীন কবির ও সাবেক উপাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) চন্দনা সাহার কাছে শিক্ষার্থীরা দ্বারস্থ হলে শিক্ষার্থীদের পরের বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে তাদের ভর্তি নিশ্চিত করে পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। আশ্বাসের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা রীতিমতো ক্লাসে অংশগ্রহণ, বেতন-ভাতা প্রদানসহ আনুষঙ্গিক সকল প্রক্রিয়া শেষ করেন। কিন্তু ২০২৪ সালেও তারা একই ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। এবারও তারা জানতে পারেন তাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমন ভুলের কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কলেজে গিয়ে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন তাদের প্রভাব লিস্টে নাম আসেনি। ফলে তাদের প্রবেশপত্রও আসেনি। যেখানে রেজিস্ট্রেশন হয়নি সেখানে ফরম পূরণের জন্য কর্তৃপক্ষ কীভাবে টাকা নিলো এমন প্রশ্ন সবার।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, তাদের ছেলে-মেয়েদের ফরম পূরণ হয়নি। কারণ হিসেবে তারা রেজিস্ট্রেশন না হওয়াকে উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মহসীন কবির গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের ভুলের কারণে ২২ শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন হয়নি। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। যেহেতু ভুল করেছি, যেকোনো শাস্তি মেনে নেব।
তিনি আরও বলেন, গত বছর ইউএনওকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু ওই সময় অজ্ঞাত কারণে তদন্ত কমিটি সরেজমিনে এসে বিষয়টি অনুসন্ধান করেনি। এবার শিক্ষার্থীরা পুনরায় এসে বিষয়টি আমাকে জানালে বর্তমান কলেজের গভর্নিং বডির এডহক কমিটির সভাপতি মো. খায়রুল আবেদীন স্বপনের সহায়তায় পুনরায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি যাচাই-বাছাই করে তদন্ত রিপোর্ট দেবে।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।