বশেমুরবিপ্রবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটার আসন ৭৬, বরাদ্দ ৯৮ শিক্ষার্থীকে

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) ২০২৩-২০ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তিতে গড়মিলের অভিযোগ উঠেছে। এতে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন অর্ধশত শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটার আসন ৭৬টি থাকলেও বরাদ্দ ৯৮ শিক্ষার্থীকে দেওয়ায় এ জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, গত ২৫ অক্টোবর জিএসটির ওয়েবসাইটে নির্বাচিত কোটাধারীদের প্রাপ্ত বিষয়সহ মেরিট লিস্ট প্রকাশ করা হয়। কিন্তু ২৭ অক্টোবর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এসে অনেকেই দেখতে পান, জিএসটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিষয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিট লিস্টের প্রাপ্ত বিষয়ের মিল নেই। ফলে বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলা বিষয়ে চূড়ান্ত ভর্তি সম্পন্ন করেন তারা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সার্কুলার অনুসারে মুক্তিযোদ্ধা কোটার আসন সংখ্যা ৫ শতাংশ বা ৭৬টি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির পক্ষ থেকে ৯৮ জন শিক্ষার্থীকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে জানালে তারা জিএসটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জিএসটির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। এ অবস্থায় সোমবার (১১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কেন্দ্রীয়ভাবে নবীনবরণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়। 

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কমিটির সঙ্গে কথা বললে তারা তাদের ওরিয়েন্টশন বিষয়টি অস্বীকার করেন। তারা জানান, এ ওরিয়েন্টশন শুধু সাধারণ মেরিটের ছাত্রদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। এটা তাদের জন্য নয়।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সার্কুলার অনুসারে মুক্তিযোদ্ধা কোটার আসন সংখ্যা ৫ শতাংশ বা ৭৬টি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির পক্ষ থেকে ৯৮ জন শিক্ষার্থীকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি করা হয়েছে, যা বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মৃণাল কান্তি বাওয়ালি বলেন, ‘আমরা জিএসটি থেকে যে লিস্ট পেয়েছি, তার ভিত্তিতে ভর্তি করিয়েছি। এখানে একটা সমস্যা হয়েছে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মোট সিট সংখ্যা ৭৬টি। কিন্তু জিএসটি থেকে ৯৮ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয় চূড়ান্ত ভর্তির জন্য।’

তিনি বলেন, ‘এই টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য আমরা তাদেরকে শুধু টাকা জমা নিয়ে ভর্তি করে রেখেছি। কিন্তু কাউকে সাবজেক্ট দেওয়া হয়নি। এখানে টেকনিক্যাল কিছু সমস্যা হয়েছে, যার জন্য এমন হয়েছে। আমরা গুচ্ছের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, আশা করি এ বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে।’

আরো পড়ুন: জুলাইয়ের আন্দোলনে ঢাবি ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ফুটেজ ছাত্রলীগ-পুলিশকে দিতেন এই অধ্যাপক!

ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমাদের কোটায় যে ৫ শতাংশ আছে, এতে ৭৬ জন হয় মুক্তিযুদ্ধো কোটায়। কিন্তু আমাদের যে সিলেকশন লিস্ট পাঠিয়েছে জিএসটি থেকে, তাতে মনে হয় ৯৬-৯৮ জন আছে। ১৮ জন বেশি পাঠিয়েছে। যে বিভাগে ২-৩ জন করে মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকার কথা, সেখানে কোনো কোনো বিভাগে ৫ জন ৬ জন করে আছে। এ বিষয়টি আমরা সলভ করার চেষ্টা করছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা জিএসটিকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। এখন সমস্যা হলো সেখানে কোনো রেগুলার বডি নেই। সব উপাচার্য পরিবর্তন হয়ে গেছে। নতুন উপাচার্য আসার পর কোনো মিটিং হয়নি। মিটিংয়ে বিষয়টি তোলার জন্য উপাচার্যের সঙ্গে বসব।’ 

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, ‘এ বিষয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে মিটিং আছে। মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করব। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে।’


সর্বশেষ সংবাদ