৯ দফা দাবিতে বিইউপি শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

বিইউপিতে আন্দোলন
বিইউপিতে আন্দোলন  © টিডিসি ফটো

৯ দফা দাবি আদায়ে প্রশাসনকে ৩ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিউপি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে লিখিতভাবে এসব দাবি জানিয়েছে তারা।

শিক্ষার্থীরা লিখিত দাবিতে জানায়, ছাত্র জনতার গনঅভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রীয়ভাবে সব পর্যায়ে সংস্কারের কাজের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে তিন কার্যদিবসের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য ৯ দাবি পেশ করছি। দাবিগুলোর মধ্যে রযেছে-

১. ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং আকারে অনতিবিলম্বে প্রকাশ করতে হবে। কেন বিইউপি প্রশাসন (ভিসি, প্রো-ভিসি, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর) থাকার পরও "নির্বিচারে মিরপুর সেনানিবাসের প্রবেশমুখে, মিরপুর ১২ বাসস্ট্যান্ড এলাকায়, মিরপুর সেনানিবাস এলাকায় এবং ডিওএইচএস শিক্ষার্থী হলে ও আবাসনে পুলিশ আর সশস্ত্র ছাত্রলীগ ও তদানীন্তন সরকারের দোসরদের যৌথ আক্রমণ হলো"- তার স্পষ্ট জবাব আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ব্যাখ্যা সমেত প্রকাশ করতে হবে।

২. বিইউপি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সমন্বয় করে সেমিস্টার ফি নির্ধারণ করতে হবে। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের সেমিস্টার ফি সর্বোচ্চ তিন হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

৩. বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া পূরণের জন্য প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে, শিক্ষার্থীদের আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী করে তুলতে; নেতৃত্বের সুস্থ বিকাশের ক্ষেত্র উন্মোচন করার জন্য; গণতান্ত্রিক চর্চার পথ সুগম করার জন্য; এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্বের উপযোগী জনগোষ্ঠী হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্বাচিত একটি কমিটি গঠন করতে হবে। প্রশাসনের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন এবং যোগাযোগ সমন্বয় করার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বের কোনো বিকল্প নেই। আমরা, সাধারণ শিক্ষার্থীরা তিন কার্যদিবসের মধ্যে কাঠামো ও রূপরেখা চূড়ান্ত করে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করবো।

৪. ব্যাখ্যাসহ কোটার যৌক্তিক পুনঃ:বণ্টন করতে হবে।

৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আর্থিক হিসাবনিকাশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

৬. যেসব শিক্ষক আন্দোলনে সরাসরি শিক্ষার্থীবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন, তার কারণ সংবলিতপত্র তিন  কার্যদিবসের মধ্যে ছাত্রদের কাছে প্রকাশ করতে হবে। প্রকাশিত কারণগুলো শিক্ষার্থীদের বিবেচনার উপর তাঁদের (যে সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পক্ষ নেননি) অ্যাকাডেমিক পার্টিসিপেশন নির্ভর করবে।

৭. প্রত্যেক বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে একজন যোগ্য একাডেমিশিয়ানকে নিয়োগ দিতে হবে। বিভাগভিত্তিক টেকনিক্যাল সৎ, যোগ্য ও ছাত্রবান্ধব বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দিতে হবে।

৮. শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ তৈরি হেতু নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ। (ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র, উপস্থিতির হার, গ্রন্থাগারে বই বৃদ্ধি, কোর্স ইভ্যালুয়েশনের গোপনীয়তা রক্ষা, নির্দিষ্ট খেলার মাঠ এবং ইনডোর প্লে গ্রাউন্ড, স্বল্প মূল্যে মান সম্মত খাবার, হলের ফি যৌক্তিক পর্যায়ে কমানো, এডু মেইল এক্সেস, উন্নত গতির ওয়াইফাই, বাসের সুবিধা বৃদ্ধি, ক্যাম্পাসে অবস্থানের সময় বৃদ্ধি, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, ভিজিটর প্রবেশ, সাংস্কৃতিক এবং সহশিক্ষা বিষয়ক সুবিধা বৃদ্ধি, শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা, স্টাফ এবং ফ্যাকাল্টিদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে)

৯. প্রত্যেক বিভাগের নিজস্ব কিছু দাবি-দাওয়া আছে। সেগুলো এই সপ্তাহের মধ্যে স্ব স্ব বিভাগীয় প্রধানের নিকট জানানো হবে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা লিখিত দাবিতে আরও জানায়, এসব দাবির প্রেক্ষিতে তিন কার্যদিবসের মধ্যে যৌক্তিক ও বাস্তবমুখী প্রশাসনিক ব্যবস্থা দেখতে চাই এবং এর অনুমোদন দিয়ে আজকের মধ্যে লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায় সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম এবং ক্লাসে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে।


সর্বশেষ সংবাদ