জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মেসে মেসে রাতভর পুলিশের অভিযান

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি মাত্র ছাত্রী আবাসিক হল থাকলেও সিংহভাগ শিক্ষার্থী মেস ভাড়া করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় বসবাস করে। তবে চলমান কোটা আন্দোলন নিয়ে বর্তমান সময়ে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের মেসে পুলিশ পরিচয়ে তল্লাশি চালানোর অভিযোগ উঠেছে এবং মেস ছেড়ে বাসায় ফিরতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) মধ্যরাতে পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশ কিছু ভাড়াটিয়া মেসে এঘটনা ঘটে।

সুত্রাপুরের শিংটোলা বসবাসরত শিক্ষার্থী নাগিব বলেন, 'আমরা এক বাসায় নয়জন থাকি। পুলিশের পোশাকসহ সিভিলে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন লোকের একটা টিম আসে। আমাদের এসে বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার মধ্যে বাসা ছেড়ে দিয়ে চলে যাবেন। আমাদের আরেকটি টিম সকাল ১০টায় এসে খোঁজ নিয়ে যাবে।'

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছাত্রলীগের বা যুবলীগ নেতাকর্মীরা পুলিশের পরিচয়ে তাদের ভয়ভীতি, মেস ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এরই মধ্যে পুরান ঢাকার শিংটোলা, ধোলাইখাল, রুকনপুর, গেন্ডারিয়া, সুত্রাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত শিক্ষার্থীদের মেসে তল্লাশির ঘটনা ঘটেছে।

গেন্ডারিয়া থানায় ধোলাইখালে অবস্থিত তিন ইউনিটের ছয়তলার একটি বাসায় সব ফ্লোরেই ছাত্রীরা থাকেন। ওই ভবনের বসবাস করা মোহনা রাহমান নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাসার মালিকসহ কিছু মানুষ আমাদের বলেন, বৃহস্পতিবারের মধ্যে মেস ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে।'

আমরা বলছি, 'আমাদের অনেকেই টিউশনি করাই, স্টুডেন্টের পরীক্ষা আছে। আমরা চাইলেও স্টুডেন্টের পরিবার যেতে দিবে না। রাস্তায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দ্বায় কে নিবে? আর যেতেও তো অনেক টাকা ভাড়া লাগবে। তখন তারা বলেন, ঠিক আছে আপনারা বাসায় থাকেন। কিন্তু আন্দোলনে যাবেন না। আর পরিবেশ শান্ত না হলে আস্তে আস্তে বাসায় চলে যাবেন।'

আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে জবির ছাত্রী হলে মোমবাতি প্রজ্বলন

তবে মেসে হানা দেওয়া এবং মেস ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে স্থানীয় থানা পুলিশ। এ বিষয়ে সুত্রাপুর থানার ডিউটি অফিসার মামুন মাহমুদ বলেন, 'আমাদের পুলিশ গেলে আমরা জানতাম। এ ধরনের কিছু জানা নেই। আর পুলিশ গেলে ইউনিফর্মে যাবে। পুনরায় গেলে থানায় খবর দেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।'

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'সবকিছু তো আমার নিয়ন্ত্রণে না। আমাদের যতটুকু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে, ততটুকুতে এখনো কেউ আঘাত হানতে পারেনি। আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেকগুলো মেসে অবস্থান করে। এতগুলো মেসের সন্ধান তো আমার কাছে নেই। তারপরও বিষয়গুলো আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।'

 

সর্বশেষ সংবাদ