কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উত্তপ্ত কেন, পেছনের রহস্য কী

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়   © ফাইল ছবি

গত ৩০ এপ্রিল অনির্দিষ্টকালের জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। এর আগে দফায় দফায় ৭ দাবিতে শ্রেণি কার্যক্রম রেখেছিল শিক্ষক সমিতি। এছাড়া উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈনসহ ৩ জন শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে শিক্ষক সমিতি। এসব ঘটনায় উপাচার্যপন্থিদের হামলার শিকার হন শিক্ষকরা। এসব ঘটনায় ক্যাম্পাসটিতে বিরাজ করছে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো?

জানা যায়, যোগদানের পর থেকেই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈনের বিরুদ্ধে আসতে থাকে একের পর এক অভিযোগ। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- বিতর্কিত নিয়োগ, যারা ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীলতা তৈরি করেছেন তাদের নিয়ে নিজস্ব বলয় গঠন, আইন না মেনে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ, ঢাকার গেস্ট হাউস ব্যক্তিগতভাবে কুক্ষিগত করে রাখা, নিয়ম না মেনে গাড়ি ক্রয়, তথ্য গোপন করে উপাচার্য হওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত বেতন ও ইনক্রিমেন্ট নেওয়া।

এছাড়া বিভিন্ন প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগও উঠতে থাকে তার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন অনিয়ম উল্লেখ করে প্রায় ২০ জন শিক্ষক বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে পদত্যাগও করেছেন।

তবে এসব বিষয় নিয়ে উপাচার্যের সাথে শিক্ষকদের বিরোধ থাকলেও বিষয়টি আরও ঘোলাটে আকার ধারণ করে গত ১৯ ফেব্রুয়ারির পর। এদিন শিক্ষকদের লাঞ্ছনা করেন সাবেক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এসময় শিক্ষকদের থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন এক কর্মকর্তা। তারপর এ ঘটনায় বিচারসহ ৭ দফা দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক সমিতি। 

দাবি না মানলে ৩ দফায় ক্লাস বর্জনের পর উপাচার্যসহ ৩ দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষক সমিতি। তবে গত ২৮ এপ্রিল সাবেক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশকালে শিক্ষকদের মারধর করেন উপাচার্যসহ সাবেক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এসময় কয়েকজন শিক্ষক আহত হন। পরে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্যের অপসারণ দাবি করে মানববন্ধন করে শিক্ষক সমিতি। শিক্ষকদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। 

ওইদিন সন্ধ্যায়ই অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন। শিক্ষক নেতারা বলছেন, উপাচার্যের একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও একগুঁয়ে আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করে তুলছে। বর্তমানে সমস্যাটি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণা করতে হয়েছে। যা আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুবি শিক্ষক সমিতি গঠনের পর দেখা করতে গেলে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী শিক্ষকদের লাঞ্ছনা ও থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনার বিচার দাবি করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। অথচ ২০২৩ সালের সহকারী প্রক্টর অমিত দত্তের সাথে ছাত্রলীগের দুই নেতার বাকবিতণ্ডা হলে ওই দুই নেতাকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

তবে বহিষ্কারের পরপরই উপাচার্য মদদপুষ্ট সাবেক শিক্ষার্থীদের মারধরের শিকার হন দুই শিক্ষার্থী। তাদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। উলটো বিষয়টি নিয়ে হাসতে দেখা যায় প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীকে। মারধরকারী ওই সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়েই বিভিন্ন অনুষ্ঠান উদ্‌যাপন করেন উপাচার্য।

এছাড়া দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন জমা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি। পরে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসন ওই সংবাদ পরিবেশন করা সাংবাদিককে বহিষ্কার করে। হাইকোর্টে আপিল করলে সেই বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করা হয়। তবে ক্যাম্পাসে অস্ত্রসহ বাইক শোডাউন, ফাঁকাগুলির মতো ঘটনা ঘটলে সে বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অ্যাকাডেমিক সভায় সিনিয়র শিক্ষককে থাপ্পড় মেরে চোখের চশমা ভেঙে ফেলেন জুনিয়র শিক্ষক। এ ঘটনার কোনো বিচার হয়নি। তবে সম্প্রতি ওই জুনিয়র শিক্ষকই উপাচার্যের অনিয়মের অভিযোগ তুলে পদত্যাগ করেছেন। ক্রীড়া কমিটির এক মিটিংয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক কাজী এম. আনিছুল ইসলাম। সে ঘটনায় পর কয়েকদিন পরই উপাচার্য মঈন সাংবাদিকতা বিভাগের ওই শিক্ষকের সঙ্গে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেন।

এছাড়াও ওই শিক্ষক সহকর্মীদের কুত্তা, কুকুরের পৌত্র, প্রত্নতাত্ত্বিক বান্দর বলে গালি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব বিষয়ের কোনোটিই আমলে নেননি ভিসি মঈন। পক্ষ-বিপক্ষে বুঝে বিভিন্ন মামলার অভিযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পারিবারিক মামলায় চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতিও দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য।

এদিকে, যোগদানের পরপরই আইন অমান্য করে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর পদে নিয়োগ দেন কাজী ওমর সিদ্দিকীকে। মাদককে প্রশ্রয় দেওয়া, কুবির অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে ভূমি বাণিজ্য ও ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে ছাত্রলীগের বিতর্কিত ও হত্যা হামলার আসামিদের মদদ দেওয়া, শিক্ষকদের মারতে যাওয়ার ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও শিক্ষা ছুটি না নিয়ে পিএইচডি করেছেনও তিনি। যা বোর্ড অনুমোদন না দিলেও উপাচার্যের নির্দেশে নথিভুক্ত করা হয়েছে।

তারপরেই নিয়ম না মেনে ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন অধ্যাপক রশিদুল ইসলাম শেখকে। যোগদানের পরেই মার্কেটিং বিভাগের নির্দিষ্ট এক প্রার্থীকে নিতে অভিনব উপায়ে এক অনুবিধি যোগ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাকে ‘অবৈধ’ নিয়োগ দেন তিনি।

একই কায়দায় নিয়োগ দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদকেও। আবার নিজ জেলা বরিশালের ৭ জনসহ আত্মীয়কেও নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য মঈন। এসব নিয়োগে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে জনশ্রুতি রয়েছে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে অধ্যাপকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে তিন বৎসর মেয়াদে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেওয়ার কথা থাকলেও পাঁচটি বিভাগের অনিয়ম করেন তিনি। বিধি মোতাবেক পদ দিতে ভিসি বরাবর চিঠি দিলেও তিনি তা আমলে না নিয়ে ফের অনিয়ম করে ডিন নিয়োগ করেন।

গত ৯ অক্টোবর প্ল্যানিং কমিটির আপত্তি ও শর্ত পূরণ না করেই ‘অধ্যাপক’ হয়েছেন লোক প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোসা. শামসুন্নাহার। নিজের পদোন্নতি সংক্রান্ত সভায় নিজেই সভাপতিত্ব করে পদোন্নতি ভাগিয়ে নিয়েছিলেন ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. বনানী বিশ্বাস। তবে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণের পরেও ৫ শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে দিয়ে জুনিয়র শিক্ষককে সিনিয়র বানিয়েছেন ভিসি আবদুল মঈন।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, উপাচার্য যোগদানের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম করে যাচ্ছেন। উপাচার্যের কোনো কাজই আইন ও নিয়ম মতো হয়নি। তথ্য গোপন করে উপাচার্য হওয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিভিন্নভাবে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ, নিয়োগে অস্বচ্ছতা, আত্মীয়কে নিয়োগ দেওয়ার মতো কাজ করেছেন।

তিনি বলেন, এসব কাজ শক্তভাবে করার জন্য হত্যা মামলার আসামি, জেল খাটা সাবেক শিক্ষার্থী ও ভূমিদস্যুদের নিয়ে তিনি নিজের বলয় তৈরি করেছেন। তাদের দিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারধর করিয়েছেন। আবার তাদের সাথেই তিনি বিভিন্ন উৎসব পালন করেছেন। উপাচার্যের এই একগুঁয়ে আচরণই ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে।'

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমরা ক্লাসে ফিরে এসেছিলাম। কিন্তু গত ২৮ এপ্রিল উপাচার্য ও তার ক্যাডার বাহিনী শিক্ষকদের উপর যে হামলা চালিয়েছে, তা কখনও মেনে নেওয়া যায় না। তাই সকল শিক্ষক ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রয়েছেন।

সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তিনি বলেন, গত ২৮ এপ্রিল উপাচার্য নিজেই হামলা করেছেন এবং তিনি এত অনিয়ম করেছেন যে তার পদে থাকার যোগ্যতা তিনি হারিয়েছেন। আর আমরা এখন একদফা দাবিতে আন্দোলন করছি। উপাচার্যের অপসারণ কিংবা পদত্যাগই একমাত্র সকল সমস্যার সমাধান।

উপাচার্যপন্থি শিক্ষক প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, চলমান সংকট নিরসনে গতকাল দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজকে বিকেলে এই কমিটি হয়ত আলোচনায় বসবে।

রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, চলমান সংকট কারণ খুঁজতে গেলে ৩টি ঘটনা দেখলেই বোঝা যাবে। একটি ১৯ ফেব্রুয়ারি, আরেকটি ২৭ এপ্রিল এবং সর্বশেষ ২৮ এপ্রিলের ঘটনা।

‘‘১৯ ফেব্রুয়ারির পর বহিরাগত ছাত্ররা ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যদি উপাচার্য ব্যবস্থাগ্রহণ করতেন তাহলে আজকে এই অবস্থার সৃষ্টি হতো না। আবার ২৭ এপ্রিল শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করার পর তিনি কোনো গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। বিষয়টি কোষাধ্যক্ষ স্যার সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু তিনি চলে যান উপাচার্যের বাংলোতে। তারপরের দিন উপাচার্যসহ কয়েকজন বহিরাগত ছাত্র দিয়ে শিক্ষকদের আঘাত করেছেন।’’

অধ্যাপক সৈয়দুর রহমান বলেন, এখন যদি এই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান প্রয়োজন হয়, তাহলে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দিয়ে তদন্ত কমিটি করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। কারণ উপাচার্য নিজেও এখন অভিযুক্ত। এছাড়াও শিক্ষক সমিতি এখনও তাদের একদফা দাবিতে অটল আছে। যদি উপাচার্যের অপসারণ করানো হয়, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই সেটা করতে পারবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, এসব বিষয়ে আমি কোনো কথা বলা ঠিক হবে না। তবে এটা কোনো সুখকর খবর না। এরকম কেন হলো, এত সুন্দর একটা ক্যাম্পাস রেখে আসছিলাম। স্মুথলি কত সুন্দর করে ক্যাম্পাস চলছিল। গেইট করলাম, রাস্তা করলাম, আর তো কিছুই বাদ রাখিনি। তারপরেও এই অবস্থায় চলে আসবে এটা আমাকে দুঃখ ও পীড়া দেয়।

চলমান সংকটের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সাবেক ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, এটা আমার বিশ্ববিদ্যালয় না। আমি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। শুনেছি আমাকে একটি তদন্ত কমিটিতে রাখা হয়েছে। আমি এখনও হাতে চিঠি পাইনি। চিঠি পাওয়ার পর মিটিং কল করে তারপরে মন্তব্য করতে পারব।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এছাড়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈনকে একাধিকবার কল করেও তার থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

 

সর্বশেষ সংবাদ