বেরোবিতে দু-মাস ধরে নেই বিভাগীয় প্রধান, প্রশাসনিক ভবনে তালা দিল শিক্ষার্থীরা
- বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৪, ০৩:৪১ PM , আপডেট: ০৬ মে ২০২৪, ০৪:১৫ PM
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ প্রায় দুই মাস হতে বিভাগীয় প্রধান শূন্য হয়ে আছে। ফলে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে বিভাগটি। প্রশাসনিক ক্লাস-পরীক্ষার সাথে সাথে বন্ধ হয়ে আছে প্রশাসনিক কাজকর্মও। এ অবস্থায় আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ। বিভাগীয় প্রধান পেতে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে। এমনকি প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে থেকে কর্মকর্তাদেরও বের হতে দিচ্ছে না ।
সোমবার (৬ মে) দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে। জানা যায়, প্রশাসনিক ক্লাস-পরীক্ষার সাথে সাথে বন্ধ হয়ে আছে প্রশাসনিক কাজকর্মও। এ অবস্থায় আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ। রবিবার দুপুর থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ তাঁর দপ্তরে আসেন নি।
বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ নজরুল ইসলাম গত ১০ মার্চ বিভাগীয় প্রধান হিসেবে তাঁর দায়িত্বের মেয়াদ শেষ করেন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন ২০০৯ এর ধারা-২৮(৩) অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রম অনুযায়ী 'বিভাগীয় প্রধান' হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার কথা বিভাগের অপর সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধানের। কিন্তু তা না করে সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহারকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।
নিয়ামুন নাহার উক্ত পদে যোগদান করতে অস্বীকৃতি জানালে দ্বিতীয়বার আইন লঙ্ঘন করে অপর জুনিয়র সহকারী অধ্যাপক সারোয়ার আহমাদকে নিয়োগ দেয়া হয়, তিনিও যোগদান করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এর পর আবারও আইন লঙ্ঘন করে অপর জুনিয়র সহকারী অধ্যাপক মোঃ রহমতুল্লাহ কে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। তিনিও দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ১০ মার্চ থেকে বিভাগীয় প্রধান শূন্য হয়ে আছে বিভাগটি। এর ফলে বিভাগের সকল কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়েছে। ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকায় আইন অনুযায়ী তাবিউর রহমান প্রধানকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদানের জন্য আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবারের মধ্যে আইন অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ করা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, আইন অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করে বিভাগের কার্যক্রম দ্রত সচল করা হোক। রবিবার আন্দোলন চলাকালীন বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা, ছাত্র উপদেষ্টা এবং অন্যান্যরা সমস্যা সমাধানের জন্য সাত দিন সময় চাইলে শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্য নাকচ করে দেয়। শিক্ষার্থীরা বলেন, গত দুই মাস থেকে বিভাগ অচল হয়ে আছে আর এখন সাত দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে এটা আমরা বিশ্বাস করি না।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের বিষয়ে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মুহম্মদ আলমগীর চৌধুরী বলেন, আইনগত জটিলতা থাকায় বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আইনগত কী জটিলতা এ বিষয়ে পরিষ্কার করে তিনি কিছু বলতে পারেন নি। তবে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। কমিটির প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ বলেন, বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে আইনি জটিলতা থাকায় বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সমস্যাটির সমাধান করতে গত সপ্তাহে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।