অধ্যাপক বাবা জামালের সঙ্গে অবন্তিকার ছবি এখন কেবলই স্মৃতি

বাবা মো. জামাল উদ্দিন ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেয়ে ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা
বাবা মো. জামাল উদ্দিন ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেয়ে ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা  © সংগৃহীত

আলোচিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার (২৪) ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের রমজানে তার বাবা সরকারি কলেজের অধ্যাপক বাবা মো. জামাল উদ্দিন মারা যান। তাই এক বছরের মধ্যে স্বামী-সন্তান হারিয়ে আহাজারি যেন থামছেই না তাহমিনা শবনমের। 

বাবা যখন বেঁচে ছিলেন তখন তাদের মধ্যে কতই না সুমুধুর ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। বাবা-মেয়ে একসঙ্গে খুনসুটির ছবিটিই প্রমাণ করে তাদের মায়ার বন্ধন। তবে এখন সবই শুধু স্মৃতি। আপনজনদের হারিয়ে পরিবার ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে তাহমিনা শবনমের।

ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার বাবা মো. জামাল উদ্দিন মৃত্যুর আগে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ ও কুমিল্লা সরকারি কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন। ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল রোজার সময় তিনি মারা যান।

আরও পড়ুন: অবন্তিকার মায়ের ভাষ্যে উঠে আসল আরও ৬ জনের নাম

এদিকে শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টায় আত্মহত্যা করে মারা যান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা। মারা যাওয়া পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দীন ইসলামকে দায়ী করে যান।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই, তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী আর তার সহকারী হিসেবে তাকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।’

ফাইরুজের ওই পোস্ট দেখে ঢাকা থেকে সহপাঠীরা ফোন করলে পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনাস্থল থেকে একজন জানান, পরিবারের সদস্যরা ও কুমিল্লায় অবস্থানরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী ঝুলন্ত অবস্থায় ফাইরুজকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবন্তিকার জানাজা হবে শনিবার জোহরের পর। কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা কবরস্থানে বাবার পাশেই দাফন করা হবে তাকে। ফাইরুজ অবন্তিকার মৃত্যু পরপরই অভিযুক্ত শিক্ষক দীন ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত ও প্রক্টরিয়াল বডি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত এই শিক্ষার্থীকে দ্রুত গ্রেপ্তারের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


সর্বশেষ সংবাদ