কোকিলের কুহু-কুহু মূর্ছনায় মুগ্ধ তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা
- আমান উল্যাহ আলভী
- প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১০:৫৭ AM , আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪, ০২:২৫ PM
শীত শেষে বসন্ত এলেই শুরু হয় কোকিলের মিষ্টি-মধুর কুহু-কুহু ডাক। গাছের ডালে বসে থাকা কোকিলের এমনই ডাকে মুগ্ধ রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাস। এগারো একরের ক্যাম্পাসে হাঁটতে-চলতে, ক্লাসের সময়ে কিংবা দুপুরের তপ্ত রোদেও কোকিলের এমন ডাকে মুগ্ধ হন শিক্ষার্থীরা।
এ ঋতুতে কোকিল অনেকটা বিরামহীনভাবে ডাকে। তবে অন্য ঋতুতে বিশেষ আকর্ষণীয় এই পাখিটি কী তবে নীরবতা পালন করে। এমন প্রশ্ন উঁকি দেয় অনেকের মনে। আবার অনেকে ভাবেন পাখিটির প্রতারণার গল্পও।
ক্যাম্পাসের গাছগুলোতে যখন শীতের রুক্ষতা ও শুষ্কতা শেষে প্রকৃতি সতেজতা ফিরে পেতে থাকে, পাতাঝরা গাছ কচি পাতায় ভরে ওঠে, নতুন পল্লবে সজ্জিত গাছের মগডালে বসে তখন বসন্তের আগমনী বার্তা দেয় এই কোকিল।
এমনটি কবিতা-গল্প-উপন্যাসে বারবার ওঠে এলেও কোকিলের প্রতারণা ও চতুরতার কথা হাসি-মুখে উড়িয়ে দেন অনেকে।
সকালে যখন শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে ক্যাম্পাসে আসেন, তখনই বেশি শোনা যায় কোকিলের কুহু কুহু সুরের মূর্ছনা। শিক্ষার্থীরাও পাখিটির সুরের মূর্ছনায় মুগ্ধ হয়ে শোনেন। ক্লাসে যখন শিক্ষকরা ক্লাস নেন তখনও শোনা যায় পাখিটির মিষ্টি সুর।
তিতুমীর কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার বলেন, এই ইটপাথরের শহরে পাখিদের আনাগোনা খুবই কম। পাখিদের বাসস্থান না থাকায় তারা এই শহরে তেমন একটা ভিড় জমায় না। কিন্তু আমাদের ক্যাম্পাসে সবুজের সমারোহে বসন্ত এলেই কোকিলের কুহু-কুহু ডাক শোনা যায়। আমরা মুগ্ধ হয়ে কোকিলের ডাক শুনি।
এগারো একরের এই ক্যাম্পাসে গাছপালায় আবৃত থাকার কারণে ইটপাথরের এই শহরে কোকিলরাও একটু প্রশান্তির পাওয়ায় আশায় ক্যাম্পাসে ভিড় জমায়। আর তাদের সুরে মূর্ছনায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মুগ্ধ করে শিক্ষকদেরও।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী বলেন, কোকিল সুসময়ের পাখি। প্রকৃতির যে ছয়টা ঋতুর মধ্যে ঋতুরাজ বসন্ত যখন আসে তখন এই পাখির আগমন ঘটে। কোকিল ভীষণ আন্ত মগ্ন একটা পাখি। সে মানুষকে তার মিষ্টি কণ্ঠ দিয়ে ভোলায়।
তিনি বলেন, মানুষ এই পাখির সুরে-সুরে প্রলোভিত হয়, আন্দোলিত হয়। তার প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে তখন সে চলে যায়। কিন্তু এই স্বার্থপরতা মানুষ জানে। তাও মানুষ যেহেতু সুন্দরের অবগাহন করে, সেহেতু এই পাখিকেও উপেক্ষা করতে পারে না। ইটপাথরের শহরে ক্যাম্পাসে ভেতরে সবুজের সমারোহে পাখির ডাক মুগ্ধ হয়ে আমিও উপভোগ করি।