কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

গেস্টহাউস ‘উপাচার্যের দখলমুক্ত’ করতে সময় বেঁধে দিল শিক্ষক সমিতি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)  © সংগৃহীত

২০১৪ সালে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) তৎকালীন উপাচার্য ড. মো. আলী আশরাফের সময়ে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজধানীর কমলাপুরে একটি গেস্ট হাউজ ক্রয় করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। ব্যবস্থা ছিল জরুরি সভার আয়োজনেরও। তবে অভিযোগ উঠেছে, বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈন ব্যতীত কেউই যেতে পারেন না সেখানে। চাবিও রয়েছে তার নিজের নিয়ন্ত্রণে।

গেস্ট হাউজ ‘উপাচার্যের ব্যক্তিগত দখলদারিত্ব’ থেকে মুক্ত করে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ব্যবহার উপযোগী করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর চিঠি দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এছাড়াও আগামী ১ মার্চের মধ্যে গেস্ট হাউজ উপাচার্যের দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করতেও বলা হয়েছে চিঠিতে। 

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়। 

চিঠিতে শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেন, শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দের বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করে থাকে। গত দুই বছর শিক্ষক সমিতির কার্যক্রম না থাকার সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন তার নিজস্ব ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর আবাসন এবং জরুরি প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্রয়কৃত গেস্টহাউস ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করে আসছেন। এ সময় পর্বে বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োজনে বা ব্যক্তিগত কারণে গেস্টহাউস ব্যবহার করতে চাইলে তিনি তাদের সাথে বিভিন্ন ধরনের দুর্ব্যবহার করেছেন।

আরও পড়ুন: শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলকালাম

চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গেস্টহাউস তত্ত্বাবধানের জন্য নিয়োজিত কর্মচারীকেও ঢাকাস্থ গেস্টহাউস থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যাহার করে উপাচার্য নিজে গেস্টহাউসের চাবি হস্তগত করে এটিকে ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত করেছেন। উপরন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট নয়, এমন ব্যক্তিদের ঢাকাস্থ গেস্ট হাউজে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বসবাস করার অনুমতি দেন। যে ভবনে গেস্টহাউসটি অবস্থিত, সেখানকার লগবই, গেস্টহাউস এর লগবই এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এ সম্পর্কিত সকল তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করা সম্ভব।

চিঠিতে শিক্ষক নেতারা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ক্রয়কৃত ঢাকাস্থ গেস্টহাউসটির আবাসন সুবিধা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অফিসিয়াল বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারছেন না। এভাবে উক্ত গেস্টহাউসের ব্যক্তিগত দখলদারিত্ব ও অপব্যবহারের ফলে রাষ্ট্রীয় সম্পদ সুষমভাবে ব্যবহার হচ্ছে না।

এমতাবস্থায় নির্বাচনী ইশতেহারের ০৭ (সাত) নম্বর ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে আগামী পহেলা মার্চ এর মধ্যে অবিলম্বে ঢাকাস্থ গেস্টহাউস কে উপাচার্য মহোদয়ের অবৈধ দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বের নীতিমালা অনুযায়ী পর্যাপ্ত লোকবল ও সুযোগ সুবিধাসহ শিক্ষক- কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যবহারের জন্য চিঠিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায় শিক্ষক সমিতি।


সর্বশেষ সংবাদ