অবরোধে অনিশ্চিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পরীক্ষা

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

বিরোধীদলগুলোর ডাকা ৩ দিনব্যাপি অবরোধে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের আসন্ন পরীক্ষা। আগামী ২ নভেম্বর তারিখে অনার্স প্রথম বর্ষের পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। একই সাথে ২য় বর্ষে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই  ইমপ্রুভ, রিটেক পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করবে । 

দূরপাল্লার গাড়ী চলাচল না থাকায় প্রতন্ত্য অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহনের  সুযোগ অনেকাংশেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিরোধী দলের ডাকা হরতাল-অবরোধে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

খুলনার সরকারি ব্রজলাল কলেজ পড়ুয়া কয়েকজন শির্ক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস- কে জানায়, হরতাল-অবরোধের কারনে, তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে পড়েছে। ভালো প্রস্তুতি থাকা সত্বেও জান-মালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারছিনা। 

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, হরতাল-অবরোধের ফলে  রাস্তায় বের হলেই শোনা যাচ্ছে ককটেল বোমা সহ বিভিন্ন পদার্থ বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। গাড়ী ভাংচুর থেকে শুরু করে গাড়ী পোড়ানো, রাস্তায়  টায়ার জ্বালিয়ে আগুন দেওয়া সহ আরো অনেক ভয়াবহ চিত্র।

এছাড়াও শেরে-বাংলা নগর আদর্শ মহিলা কলেজ, বাগেরহাটের পি.সি কলেজ, গুরুদয়াল কলেজ,  কুমিল্লা সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ, রাজশাহী সরকারী কলেজ, বরিশাল বি.এম কলেজ, যশোর সরকারি এম.এম কলেজ,  যশোর সিটি কলেজ,  মাগুরা সরকারী কলেজ, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ,ঢাকা, পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ, লালমাটিয়া মহিলা কলেজ সহ আরো একাধিক কলেজের ১ ম বর্ষের পরীক্ষার্থী শিক্ষার্থীরা ডেইলি ক্যাম্পাসকে একই মতামত ব্যক্ত করেন।

ঢাকায় অবস্থানরত বগুড়ার সরকারী আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থী হাবিবুল বাশার জানায়, ইমপ্রুভ পরীক্ষায় অংশগ্রহনের উদ্দেশ্যে ১ তারিখ বগুড়ায় রওনা হয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে চেয়েছিলাম, হরতাল-অবরোধে দুরপাল্লার গাড়ী চলাচল বন্ধ থাকায় আমি এখন ভীষন চিন্তিত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছি, কি করবো বুঝতে পারছি না।

খুলনার সরকারী ব্রজলাল কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হুমায়ুন কবীর জানায়, আমার বাড়ি ঝিনাইদহে, ৩ দিনের হরতাল অবরোধের কারনে খুলনায় পৌছাতে পারছিনা। একইসাথে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ আমার জন্য প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এ অবস্থায় পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তারা জানান, বিএনপির ৩ দিনের হরতাল-অবরোধের ফলে কয়েক লাখ মেধাবী শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় অভিভাবকেরাও  ইতোমধ্যে চিন্তিত ও হতাশ হয়ে পড়েছেন। 

আরও পড়ুন: জাবির মূল ফটকসহ ৬ গেটে তালা দিল ছাত্রদল

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ঢাকায় বসবাসরত এক অভিভাবক জানান, আমার মেয়ের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি থাকা সত্বেও আমি  আমার মেয়েকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠাতে পারছি না। সে মানষিকভাবেও কিছুটা ভেঙ্গে পড়েছে। আমি মনে করি যে, আমার মেয়ের মতই প্রথম বর্ষের পরিক্ষার্থীরা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। 

এ বিষয়ে সচেতন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ  সরকার ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিনীত ভাবে দাবি জানিয়েছেন যাতে পরীক্ষা স্থগিত রেখে আগামীতে নেওয়া হয়। এর ফলে পরবর্তীতে সকল শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে। 

এ বিষয়ে খুলনার সরকারি ব্রজলাল কলেজের একজন অধ্যাপক ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, হরতাল-অবরোধে আমাদের শিক্ষার্থীরা দূর-দূরান্তে আটকা পড়ে গিয়েছে। প্রতিনিয়ত যারা দূর পাল্লার যানবাহনে চড়ে আসে, তাদের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বাড়ি মফস্বলে হওয়ায় তারাও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভীষণরকম ক্ষতির মুখে পড়বে। আমাদের সরকার ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্ধত্বন কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা উচিত বলে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি। 


সর্বশেষ সংবাদ