গণমাধ্যমে কথা বলায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় লোগো
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় লোগো  © সংগৃহীত

গণমাধ্যমে বক্তব্য প্রদান করায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তারেক মাহমুদ আবীরকে ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের পরিচালক পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এই অভিযোগ করেন ঐ শিক্ষক। 

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. তারেক মাহমুদ আবীর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাকে ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের পরিচালক পদে দায়িত্ব দেয়া হয়। আমার সঙ্গে প্রক্টরিয়াল বডি, লাইব্রেরি এবং টিএসসি সহ মোট চারটি দপ্তরে পরিচালক পদে চারজন শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হয়। আমাদের সবাইকে একই শর্তে নিয়োগ দেয়া হলেও গত ২১ আগস্ট শুধু আমাকেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। 

এই শিক্ষক জানান, তাকে অব্যাহতি দেবার কয়েকদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজ দপ্তরে ডেকে পাঠান। উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী একজন ব্যক্তি একাধিক পদে থাকতে পারবেন না। তখন সদ্য অব্যাহতি প্রাপ্ত এই শিক্ষক উপাচার্যকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে চারজন শিক্ষক একাধিক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। 

ড.তারেক মাহমুদ আবীর অভিযোগ করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে আরো বলেন, বর্তমান উপাচার্য মহোদয়ের আমলেই এক ব্যাক্তিকে দুই থেকে তিনটি দপ্তরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এমনকি বর্তমানে যিনি ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনিও অন্য আরো দায়িত্ব পালন করছেন। এরপরও আমার সঙ্গে কোনোরকম কথাবার্তা না বলে বা কোন নোটিশ না দিয়েই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। 

এভাবে অব্যাহতি দেওয়ার কি কারণ থাকতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে এই শিক্ষক উপাচার্যকে ইঙ্গিত করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানতে চাওয়া হলে আমি  যা সত্য, তাই বলেছি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে যেটা দরকার সেটাই করেছি। এভাবে কাজ করতে গিয়ে হয়তো কারো কারো বিরাগভাজন হয়েছি। তাই আমাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। 

ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের বর্তমান পরিচালক হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সুজন চন্দ্র পাল একাধিক দায়িত্বে আছেন কিনা এ বিষয়ে জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন সাড়া পাওয়া যায় নি। তারেক মাহমুদ আবীরের অব্যাহতি যৌক্তিক কিনা এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য ড. ছাদেকুল আরেফিনের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বুধবার দুপুরে তার দপ্তরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় নি। মুঠোফোন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিকবার ফোন এবং বার্তা দিয়েও মেলেনি কোন সাড়া। 

ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের নতুন পরিচালককে দায়িত্ব প্রদান পত্রে স্বাক্ষর ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সুপ্রভাত হালদারের। বুধবার বিকেলে তার দপ্তরে গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে ; তিনি মিটিং এ আছেন বলে জানানো হয়। পরে তার মুঠোফোনে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেন নি। 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড.মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ছাত্র পরামর্শ কেন্দ্রের সদ্য সাবেক পরিচালককে অব্যাহতি দেবার ব্যাপারে আমার সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা করা হয় নি। আমি নোটিশের মাধ্যমে জেনেছি। নতুন এক শিক্ষককে ঐ দপ্তরের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব পরিবর্তনে যদি কোনো অন্যায় করা হয়ে থাকে তবে বিষয়টি দুঃখজনক।


সর্বশেষ সংবাদ