আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনে পাল্টাপাল্টি কমিটি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৫৭ PM , আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২৩, ০৭:৫৭ PM
সারাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের কেন্দ্রীয় সংগঠন আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনে পাল্টাপাল্টি দু'টি কমিটি গঠিত হয়েছে। পূর্বের কমিটি গঠনে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ পাল্টা কমিটির।
গত ২২ জুলাই (শনিবার) শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল সভা ও দ্বিবার্ষিক নির্বাচন (২০২৩-২৪) অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে।
এতে বলা হয়েছে, এই নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মোঃ মোরশেদুর রহমান এবং বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম হিরা মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সভার সম্মতিক্রমে নির্বাচন কমিশনকে নবনির্বাচিত সভাপতি ও মহাসচিবসহ সদ্য সাবেক সভাপতি ও মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সংগঠনের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে।
এদিকে একই দিনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মো. আজিম উদ্দিন খানকে আহবায়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের পাল্টা আরেকটি কমিটি গঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি ও আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের নির্বাচক কমিটির সভাপতি এ.টি এম এমদাদুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জনানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করাতে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে ফেডারেশনের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে রাবি, চবি, কুয়েট, জবি এবং বশেমুরবিপ্রবির ৫জন নির্বাচিত প্রতিনিধিকে যুগ্ম আহবায়ক এবং অন্য সকল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের আহবায়ক কমিটির সদস্য করা হয়।
এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মোঃ মোরশেদুর রহমান বলেন, কাউন্সিলররা ভোট দিয়ে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। অন্য কেউ কোন কমিটি গঠন করেছে কিনা এই বিষয়ে আমি অবগত নই।
সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলদের উপস্থিতিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে বশেমুরবিপ্রবি কর্মকর্তা সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম হিরা বলেন, তারা বড় পদ চেয়ে পায়নি বিধায় বিব্রতকর পরিস্থিত তৈরির উদ্দেশ্যে পাল্টা কমিটি করেছে। আমাদের সভায় শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া জাহাঙ্গীরনগরসহ অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিল। কিন্তু তারা যে কমিটি করেছেন এখানে শুধুমাত্র ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, এখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নেই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কমিটির একজন সদস্যকেও তারা কমিটিতে রেখেছেন। কুয়েটের হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে তার কনসার্ন ছাড়াই পাল্টা কমিটিতে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ তার।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এটি কেন্দ্রীয় সংগঠন হিসেবে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই এতে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা থাকলেও এখানে তারা অনির্বাচিতদের সমন্বয়ে কমিটি করেছে। সভাপতি এবং মহাসচিব কেউই নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত প্রতিনিধি নয়। কোন প্রকার নিয়মের তোয়াক্কা না করেই তারা গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে নির্বাচনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনির্বাচিতদের রেখেছে। এর ফলে দুইটা কমিটির জন্ম হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা সেপ্টেম্বর মাসে মধ্যে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করব।
সদ্য সাবেক শীর্ষ নেতৃত্বের নিয়মের বালাই না করাই ভাঙনের কারণ বলে মনে করছেন ফেডারেশনের সাবেক মহাসচিব ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোঃ আজিম উদ্দিন খান। তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রের বাহিরে গিয়ে তারা শেকৃবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি করতে চেয়েছিল৷ এজন্য তাদের সিদ্ধান্তে দ্বিমত পোষণ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বের হয়ে যায় এবং গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করে। পরবর্তীতে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান তিনি।
কুয়েট অফিসার্স সমিতির সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদকে না জানিয়েই কমিটিতে রাখা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আজিম উদ্দিন বলেন, সম্মতি নিয়েই আমরা তাকে কমিটিতে রেখেছি। তিনি নিজেই ওই কমিটি থেকে পদত্যাগ করে আমাদের সঙ্গে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।