বিএম কলেজের জরাজীর্ণ হলে শিক্ষার্থীদের কষ্টের জীবন

বিএম কলেজের মুসলিম হল
বিএম কলেজের মুসলিম হল  © টিডিসি ফটো

বরিশাল বিএম কলেজের মুসলিম হলে ঝুঁকিপূর্ণ টিনশেড হলে বসবাস করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, টিনশেড হলগুলোর টিনের চালেও জং ধরে গেছে। অনেক জায়গার টিন ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই অনেক রুমে পানি পড়ে। আর স্বাভাবিক আবহাওয়ায় রুম থেকেই ফুটো চালায় আকাশ দেখা যায়। তবে হলের এমন পরিস্থিতি উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। 

সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক (মুসলিম) হলের পশ্চিম পাশের টিনশেড ভবনগুলোর করুন অবস্থা। নোংরা পরিবেশ এবং বসবাসের অনুপযোগী। হলের চার পাশে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা। এতে করে যেখানে-সেখানে জন্মেছে আগাছা। হলের চারপাশে আগাছা থাকায় প্রচুর পরিমাণে মশার উপদ্রব দেখা যায়।

বসবাসের অনুপযোগী হলগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন শত শত শিক্ষার্থী। মাস্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাইদুল ইসলাম রাকিব বলেন, মুসলিম হলের ভবন রয়েছে ১টি এবং টিনশেড ভবন রয়েছে ৪টি। টিনশেড দালান গুলোর বেহাল অবস্থা। বৃষ্টি আসলে অনেক রুমে পানি পড়ছে।

তিনি বলেন, হলের চারো পাশে আগাছা, ময়লা আবর্জনা থাকায় মাঝে মাঝে অনেক রুমে বিষক্ত সাপ-বিচ্ছু প্রবেশ করে। টিনশেড ভবনের সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন। প্রতি বছর বর্ষায় টিনের চাল চুঁইয়ে অনেক রুমে পানি পড়ে।

বেহাল দশা টিনশেড হলটির

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতা মো. সজীব বিশ্বাস বলেন, ১৩৪ বছর পেরিয়ে গেলেও উন্নয়নের ছোঁয়া পাইনি আমরা। আমরা ছাত্রাবাসে নয়, যেন থাকি কোনো পরিত্যক্ত ভবনে! যেখানে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। হলের চারপাশে ময়লা-আবর্জনা থাকায় প্রচুর পরিমাণে মশার উপদ্রব দেখা দিয়েছে।

১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিএম কলজের মুসলিম হলের টিনশেড ভবনগুলো। সংস্কার মেরামত না হওয়ায় এখন ছাত্রাবাসের নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অনেক রুমের জানালা ভাঙ‍া। হলের চার পাশে আগাছা থাকায় সব সময় সাপ-বিচ্ছুর আতঙ্কে থাকতে হয় ডায়নিং ও শৌচাগারের অবস্থাও খুবই করুণ। হলের ছাত্ররা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

বিএম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শত বছরের বেশি পুরনো কলেজটিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার। কলেজটিতে উচ্চমাধ্যমিক ছাড়াও ২২টি বিষয়ে স্নাতক-স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়। শিক্ষার্থীর তুলনায় ছাত্রাবাসের সিট কম। যা খুবই অপ্রতুল। ছাত্রাবাসের অনেকগুলো কক্ষ বসবাসের অনুপযোগী।

ছাত্রবাস মেরামত ও সংস্করণের বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বলেন, হল মেরামত ও সংস্করণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে আশা করি আমরা আগামী জুলাই-অক্টোবর মাসের দিকে বরাদ্দ পেয়ে যাব। বরাদ্দ পেয়ে গেলে আমরা নতুন ভবন তৈরি করতে পারবো এবং টিনশেড ভবনের সংস্কার মেরামত করতে পারবো।


সর্বশেষ সংবাদ