ববির হল যেন অস্ত্রের গুদাম! একের পর এক বের হচ্ছে দা-কাঁচি-পাইপ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) হলগুলো থেকে বারবার বিপুল সংখ্যক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, হলগুলো যেন অস্ত্রের গুদামে পরিণত হয়েছে! মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট আরিফ হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুর ১টায় একাডেমিক ভবনের নিচতলায় (গ্রাউন্ড ফ্লোর) এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এর আগে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে বারবার অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটলেও হল প্রশাসন নীরব ভূমিকায় রয়েছে। এতে সন্ত্রাসীরা অভয় পেয়ে শিক্ষার্থীদের সামনেই দিন-দুপুরে হলে অস্ত্র মজুতের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় এসব অস্ত্র ব্যবহৃত হলে শিক্ষার্থীদের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আরও পড়ুন: ববির হলে টয়লেটে গিয়ে রামদা, স্ট্যাম্প পেলেন শিক্ষার্থীরা
তারা আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্টকে নিরাপত্তাহীনতার কথা জানানো হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। মঙ্গলবার ভোরের দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা শৌচাগারে বেশকিছু অস্ত্র উদ্ধার করে তাকে জানালেও তিনি হলে আসেননি। এভাবে আর চলতে দেওয়া যায় না বিধায় আমরা রাস্তায় নেমেছি।
শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি করে বলেন, যদি হলের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদের দায়িত্বে থাকা অনুচিত। হলে অস্ত্র মজুতের ঘটনায় জড়িতদের বিচার না করতে পারলে বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে যাবেন শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার ভোরের দিকে বঙ্গবন্ধু হলের পঞ্চম তলার শৌচাগার থেকে দা, কাঁচি, পাইপ, স্টাম্পসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে হল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত ৩ জুন শেরে বাংলা হলে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন কক্ষ থেকে দুই শতাধিক জিআই পাইপ, রড, দাসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র উদ্ধার করেন হল প্রভোস্ট আবু জাফর মিয়া। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের তিন কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করে শেরে বাংলা হল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ববির হল থেকে দুটি বটি, ১৩টি রড, ২৫টি জিআই পাইপ উদ্ধার
সমাবেশে বক্তব্য দেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত হাসান রক্তিম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের রাকিব হাসান রনি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রুম্মান হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের রাজু মোল্লা, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ইরাজ রব্বানী প্রমুখ। এসময় অস্ত্র মজুতের ঘটনার বিচারের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন তারা।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট আরিফ হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করতেই পারে। তবে হল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় কারা জড়িত বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’