‘আশ্বাসে’ আন্দোলনের মাঠ থেকে ঘরে ফিরলেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
- ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৩, ০২:৩৭ PM , আপডেট: ০৪ জুন ২০২৩, ০২:৩৭ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়কারী কর্মকর্তা ও ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করে ফিরে গেছেন।
রোববার (৪ জুন) দুপুর একটা পর্যন্ত টানা দেড় ঘণ্টা ইডেন মহিলা কলেজের দুটি গেট অবরোধের পরে কলেজটির অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য এই আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বসে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত সাতদফা দাবি পর্যালোচনা করা হবে। শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবি আমার কাছে আসার সাথে সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়কারী কর্মকর্তা উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল এর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তখন তিনি দেশের বাইরে ছিলেন বিধায় আমরা বিস্তারিত আলোচনা করতে পারিনি। কিন্তু এখন শিক্ষার্থীদের তিনজন প্রতিনিধিসহ একসাথে বসে আলোচনা মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে বদ্ধপরিকর।
সমন্বয়ক বলেন, আমরা চাই যেন কোন প্রকার জনদুর্ভোগ তৈরি না হয়। আমাদের ছেলেমেয়েদের সমস্যা আমরাই দেখব। সাত কলেজের শিক্ষক সংকট সহ সমস্যার যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো বরাবরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অন্যদের সঙ্গে কথা বলছি। আগামীকাল আমি নিজেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবো৷ ছাত্র-প্রতিনিধিদের নিয়ে উপ-উপাচার্যের সঙ্গে যতক্ষণ প্রয়োজন আলোচনা করবো। সমস্যার সমাধানে আমরা বদ্ধপরিকর।
অপরদিকে দ্রুত সাত দফা দাবি মেনে না নিলে আবারও আন্দোলনের কঠোর আন্দোলন করা হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্র প্রতিনিধি তছলিম চৌধুরী। তিনি বলেন, আগামীকাল সমন্বয়ক ম্যামসহ আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনার জন্য যাব। সেখানে যদি সাতদফা দাবি মেনে নেওয়া না হয় তাহলে মঙ্গলবার পুনরায় আন্দোলন করবো। আমাদের সাত দফা দাবিগুলো হলো —
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বিল্ডিং এ সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের হয়রানির কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
২.যে সকল শিক্ষার্থী পরবর্তী বর্ষের ক্লাস, ইন-কোর্স পরীক্ষা ও টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত অংশগ্রহণ করার পর জানতে পেরেছেন নন- প্রমোটেড তাদের সর্বোচ্চ ৩ বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে।
৩. সকল বিষয়ে পাশ করার পরও একটা স্টুডেন্ট সিজিপিএ সিস্টেম এর জন্য নন প্রোমোটেড হচ্ছেন। সিজিপিএ শর্ত শিথিল করতে হবে।
৪.বিলম্বে ফলাফল প্রকাশের কারণ ও এই সমস্যা সমাধানে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। সর্বোচ্চ তিন মাস ( ৯০ দিনের মধ্যে) ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।
৫. সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অভিভাবক কে / কারা? কোথায় তাদের সমস্যাসমূহ উপস্থাপন করবে ? তা ঠিক করে দিতে হবে।
৬. একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৭. শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: হিজাব ইস্যুতে ফের মাঠে নামছেন ঢাবির নারী শিক্ষার্থীরা
এরআগে, সকাল ১০:৪০ এর দিকে নীলক্ষেত এলাকায় জড়ো হয়ে মিছিল শুরু করেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। এরপর ঢাকা কলেজের সামনে দিয়ে ঘুরে নীলক্ষেত হয় ইডেন কলেজের সামনে এসে অবরোধ করেন তারা।
এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের ‘অযোগ্য সমন্বয়ক, মানি না মানবো না’ ‘অযোগ্য সমন্বয়ক, গদি ছাড়ো, গদি ছাড়ো’ ‘৭ দফা ৭ দাবি,মানতে হবে, মানতে হবে’ ‘সুপ্রিয়া ম্যাম চুপ কেন, জবাব চাই, জবাব চাই’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।