সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজকে জাতীয়করণসহ নানা দাবিতে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা
সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজকে জাতীয়করণের দাবিতে এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান ধর্মঘটে করছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০ টায় কলেজের প্রধান ফটকে কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী, কর্মচারী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর ব্যানারে এই অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেন আজিজুল হক কলেজের ৫০ শিক্ষার্থী
শিক্ষার্থীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ করেছেন। এসকল অভিযোগ শুধু তাদের নয়, শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকবৃন্দসহ সকলের অভিযোগ বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ও অনুমোদিত সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজটির সরকারিকরণ বাস্তবায়ন কার্যক্রম আটকে রেখে সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে। সরকারি আদেশ অমান্য করে সরকারি অধ্যক্ষ প্রেষণে নিয়োগ আদেশ বাতিলের অপচেষ্টা ও অধ্যক্ষকে তার সিটে বসতে দেয়া হচ্ছে না। বিগত ৩ বছর ধরে সরকারিকরণ প্রক্রিয়াধীন বলে নিয়োগ, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে কলেজের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির ডিড অফ গিফট (Deed of Gift) প্রদানের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও গত দেড় বছর ধরে তা সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছেনা এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে তারা আর সরকারিকরণ করবেনা তাই ভিডও দিবেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেয়ার পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ বার বার জাতীয়করণ পিছিয়ে দিচ্ছে। যার কারণে আমরা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
এছাড়া তাদের অভিযোগের মধ্যে আরও রয়েছে, শিক্ষার্থীরা ২৫ টাকা বেতনে পড়ার কথা জেনে ভর্তি হয়েও মাসে ১৩০০ টাকা বেতন দিতে হচ্ছে যা তাদের পরিবারের জন্য ভীষণ চাপের ও হতাশার। একই সাথে এটি প্রতারনার শামিল। অভিভাবক প্রতিনিধি ও শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি। নির্বাচন বিধি বহির্ভূতভাবে করার অপচেষ্টা চলছে। যেসব শিক্ষক ছুটিতে থাকবে তারা শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেনা এমন নিষেধাজ্ঞা প্রদানের মাধ্যমে ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। কলেজ সরকারিকরণ এর পক্ষে কথা বললে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের নানারকম ভয় ভীতি দেখানো হয়। শিক্ষক-কর্মচারীর চাকুরি চলে যাবে, শিক্ষার্থীদের টিসি দিয়ে দেয়া হবে এমন সব কঠোর শান্তির কথা বলা হয় ও হয়রানি করা হয়।
তাদের অভিযোগ, গভর্নিং বডির সদস্য শিক্ষক প্রতিনিধিকেও গভর্নিং বডির যেকোন সিদ্ধান্ত সঠিক সময়ে জানানো হয়না। এমনকি মিটিং থাকলেও সে বিষয়ে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে না জানিয়ে মিটিং শুরু হবার অল্প কিছু সময় পূর্বে অবগত করা হয়। যেকোন সিদ্ধান্ত কলেজের একটি গোষ্ঠীকে লাভবান করতে তাদের অনুকূলে যায় এমন সিদ্ধান্তই নেয়া হয়। কলেজের সমস্ত আর্থিক সুবিধা আছে এমন সব কর্মকান্ডে ঐ গোষ্ঠীরই সংশ্লিষ্টতা থাকে।
এব্যাপারে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নীনা একরামের সাথে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মিটিংএর ব্যস্ততার কথা বলে তা এড়িয়ে যাওয়া হয়।