‘ইবি শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় আদালতের হস্তক্ষেপ প্রশাসনিক ব্যর্থতা’
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) র্যাগিংয়ের নামে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ফুলপরী নামে বিশ্ববিদ্যালয়টির এক নবীন শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার (১ মার্চ) অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা গ্রহণসহ সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্টকে অপসারনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এ নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলেই। তবে একইসাথে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
হাইকোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীম উদ্দীন খান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ফুলপরী নির্যাতনের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এসব ঘটনায় মহামান্য হাইকোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হলো! যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও পড়াশোনার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করা। সেই জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের জন্য একটা অনন্য নজির তৈরী হলো। প্রশাসন যে ব্যর্থ এটা আমরা এতদিন আমরা মুখে বলে আসছি। কিন্তু মহামান্য আদালতের হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে এটাও একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ তৈরী হলো।
আরো পড়ুন: সাত কলেজের পরীক্ষা জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে আয়োজনের প্রস্তাব
তিনি আরও বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বের অবহেলা আমাদের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে দেখে থাকি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা, সুস্থ-স্বাভাবিক ও পড়াশোনার পরিবেশ বজায় রাখা এটা প্রশাসনের প্রতিদিনের ব্যর্থতা। প্রক্টর অফিস থেকে শুরু করে হল অফিসে এ ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের আছে। এখন আদালতের রায়ের মাধ্যমে এ ঘটনা আবার সবাই জানলো। যেগুলো নিয়ে আমরা সবসময় বলে থাকি। এ ঘটনাগুলো কেন ঘটে এবং কীভাবে ঘটে। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের যে পুরোটায় দায়। সেটা আবারো নিশ্চিত হল।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি র্যাগিংয়ের নামে এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও একজন শিক্ষককে নিয়ে এই কমিটি গঠন করতে বলা হয়। এ বিষয়ে করা রিট আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। নির্যাতনের ওই ঘটনায় তিন দিনের মধ্যে কমিটি গঠন করে পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়।