ইবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অডিও ফাঁস
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালামের ‘কণ্ঠসদৃশ’ শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডের প্রশ্নপত্র নিয়ে এক প্রার্থীর সাথে কথপোকথনের তিনটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অডিও ছড়ানোর ঘটনায় থানায় জিডি করেছেন ইবির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচএম আলী হাসান।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দিনের বিভিন্ন সময় ‘ফারাহ জেবিন’ নামের এক ফেসবুক আইডি থেকে তিনটি অডিও পোস্ট করা হয়। ছড়িয়ে পড়া অডিও ক্লিপগুলোতে এক চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড স্থগিত হওয়ার কারণ ও পরবর্তী নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত করার পাশাপাশি বোর্ডের প্রশ্ন সরবরাহ ও কিভাবে লিখতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারের সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শ করার কথা বলা হয়েছে।
এছাড়াও অডিও তিনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগ বোর্ড স্থগিতের বিষয় নিয়ে ও পরবর্তী বোর্ড নিয়ে নিয়োগপ্রার্থী ও বর্তমানে ওই বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক অলিউর রহমান অলির সঙ্গে আলাপন হয়।
আরও পড়ুন: ইবির ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ক্যাম্পাসে ডেকেছে কর্তৃপক্ষ
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচএম আলী হাসান দাবি করেছেন, কণ্ঠটা ‘এডিট’ করা। এছাড়াও এখানে একজনের কথা শোনা যাচ্ছে। ভিসি স্যার আমাকে জিডি করতে বলেছেন, তাই ইবি থানায় জিডি করেছি। অডিও পোস্টদাতার একাউন্টটি আইডেন্টিফাই করতে জিডি করা হয়েছে। অডিও কার এটা তো আমি জানি না, এটা প্রশাসন বের করবে।
এদিকে প্রথম অডিওটি শেয়ার করে পোস্টদাতা ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর ২০২২ গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় তার পছন্দের প্রার্থী অলিউর রহমান অলিকে নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হওয়ার পুনর্বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেই প্রার্থীকে আবার নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রশ্ন সরবরাহ করছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম।
অডিওর দ্বিতীয় পর্বের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, এভাবেই নিয়োগ বোর্ডের আগে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন ফাঁস করেন ড. শেখ আবদুস সালাম। ওই অডিওর ভাষ্য মতে- অপর প্রান্তের ব্যক্তিকে, কোন কোন ধরনের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসবে। কিভাবে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। কতটুকু কোন বিষয়ে লিখতে হবে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রীদের নির্যাতনের পর বাবা-মাকেও জানাতেন ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা
এছাড়াও তৃতীয় পর্বের অডিওটি বিশ্লেষণে বোঝা যায়,নিয়োগ পরীক্ষায় কোন কোন বিষয়ের উপর প্রশ্ন আসবে সেই সোর্স এবং ইংরেজিতে উত্তর লেখার প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ট্রেজারারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরামর্শ করারও কথা বলা হয়েছে।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আন নূর জায়েদ বিপ্লব বলেন, শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জিডি করেছেন। সেখানে একটি আইডি থেকে ভিসির ‘কণ্ঠ সদৃশ’ অডিও ফাঁস হয়েছে বলে উল্লেখ করা করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপাচার্যের প্রতিক্রিয়া জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।