প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে মাস্টার্স পাস করলেন বদরুন্নেসা কলেজের কুলসুম
বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম আক্তার। জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই করছেন তিনি। তারপরও এবছর সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। এইবার অংশ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ তম সমাবর্তনে। তার এতো দূর আসার পথ কখনই মসৃণ ছিল না। আশে-পাশের মানুষের বিরূপ মন্তব্যের পরও থেমে থাকেননি তিনি। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন তার দুর্গম পথ চলার গল্প।
শৈশব নিয়ে তিনি বলেন, ‘ছোট বেলা থেকে এপর্যন্ত আসাটা ছিল অনেকটা স্বপ্নের মতো। জন্মের পর থেকেই শারীরিকভাবে সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করি। আমার জন্য অনেক শ্রম ও কষ্ট করেছেন আমার দাদী, মা ও বাবা। ধরতে গেলে ছোটবেলা থেকে আমি হসপিটালে হসপিটালেই বড় হয়েছি এবং আমার পায়ে দুইবার অপারেশন হয়েছে।’
আরও পড়ুন: কারিগরি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা চূড়ান্ত
পড়াশোনার প্রতি কিভাবে আগ্রহ তৈরি হল এব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমার পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। আমার আগ্রহ দেখে আমাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন মা। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। তবে অনেকের ধারণা ছিল আমার হয়তো পড়াশোনায় বেশি দূর আগানো হবে না। অনেকে ভাবতেন আমি বড় জোর এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত পড়তে পারবো। কিন্তু পড়াশুনার প্রতি আমার ছিল অনেক অনেক আগ্রহ এবং ছোটবেলা থেকেই ভাবতাম আমি মাস্টার্স পর্যন্ত পড়াশোনা করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ আমি পেরেছি, মহান আল্লাহ তায়ালা আমাকে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। ছোটবেলার ইচ্ছে ছিল ডাক্তার হওয়ার কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি। তবে যা পেরেছি তাতেই অনেক খুশি। আমার আফসোস আমার এই পর্যন্ত আসা আমার দাদী দেখতে পারলেন না।’
উম্মে কুলসুমের মা দরিয়া নূর বলেন, ‘ছোট থেকেই আমার মেয়েকে অনেকেই অনেক রকমের কথা বলেছে।আমার মেয়ে এই পর্যন্ত এসেছে আমি অনেক খুশি, আমি চাই আমার মেয়ে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাক আরো সফলতা অর্জন করুক।’
সবশেষে কুলসুম বলেন, ‘আমার এখন একটাই চাওয়া, আমার একটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হলেই আমি খুশি। সরকারি অথবা বেসরকারি চাকুরির চেষ্টা করছি। সকলের নিকট আমি দোয়া প্রার্থী।’