ঢাবির স্ক্রিন সমাবর্তনের বিরুদ্ধে মাঠে নামছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৫১তম ও ৫২তম সমাবর্তনে স্ক্রিনে লাইভ ভিডিওয়ের মাধ্যমে সমাবর্তনে অংশ নিয়েছিলেন অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। ঢাবির অধীনে প্রথম বছরেই (৫১তম) এ স্ক্রিন সমাবর্তন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা গিয়েছিল গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের মাঝে। এবার ৫৩তম সমাবর্তনের তারিখ ঘোষণার পর এ ‘স্ক্রিন সমাবর্তন’ বয়কট করে মাঠের মাঠের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা।
ঢাকা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের (১৪-১৫) শিক্ষার্থী ঈসমাইল বলেন, টাকা দিয়ে সমাবর্তন কেন স্ক্রিনে দেখতে হবে? ঢাবি শিক্ষার্থীরা যে পরিমাণ টাকা দিয়ে সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরাও একই পরিমাণ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতেছেন। তাহলে কেউ সরাসরি আচার্য-উপাচার্যদের সঙ্গে সমাবর্তন করবেন আর কেউ স্ক্রিনে বসে বসে সমাবর্তনের নামে তাদের এ সিনেমা দেখবন! কেন এই দুইমুখো নীতি?
ঈসমাইল বলেন, আমরা চাই সাত কলেজের জন্য আলাদা অথবা একই মঞ্চে সমাবর্তন আয়োজন করা হোক। কারণ সাত কলেজের বড় একটা সংখ্যার গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থী প্রতিবছর বের হচ্ছেন। এদের জন্য আলাদা করে সমাবর্তন করাই যায়। এটা সম্ভব না হলে একই মঞ্চেই সমাবর্তন করতে হবে। যেখানে ঢাবির অন্যান্য ইনস্টিটিউটগুলো ঢাবির সঙ্গে সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছে, সেখান সাত কলেজের সমস্যা কোথায়?
আরও পড়ুন: ‘স্ক্রিন সমাবর্তন’ শিক্ষার্থীদের কাছে মরীচিকা, পান্তাভাত কিংবা যাত্রাপালার মতো
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ নভেম্বর (শনিবার)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে হবে মূল আনুষ্ঠানিকতা। ঢাবির গ্র্যাজুয়েটরা মূল ভেন্যুতে উপস্থিত থেকে সমাবর্তন অংশ নিলেও অধিভুক্ত সাত কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা ইডেন মহিলা কলেজ ক্যাম্পাস ভেন্যুতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘স্ক্রিন সমাবর্তনে’ অংশ নেবেন।
সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক অথবা একই মঞ্চে সমাবর্তনের দাবি জানিয়ে ঈসমাইল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তনের নামে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সিনেমা দেখানোর যে আয়োজন করেছে সেটি ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীরা বয়কট করেছেন। তারা পৃথক অথবা একই মঞ্চে সমাবর্তনের দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঢাকা কলেজের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। এতে সাত কলেজের গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন।
আরও পড়ুন: ‘স্ক্রিন সমাবর্তনে’ অপমানবোধ করছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা
সরকারি বাঙলা কলেজের ইতিহাস বিভাগের (১৪-১৫) শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান বলেন, সাত কলেজের জন্মের পর থেকে এ বৈষম্য চলে আসছে। পদে পদে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। সমাবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হলেও সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা এখানেও বৈষম্যের শিকার। সাত কলেজের জন্য পৃথক সমাবর্তন ও সবোচ্চ ফল নিয়ে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সম্মাননা দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম ও ৫২তম সমাবর্তনেও ‘স্ক্রিন সমাবর্তন’ নিয়েছেন অধিভুক্ত ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজের গ্রাজুয়েটরা ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাস এবং ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজের গ্র্যাজুয়েটরা।