ইউজিসির পরামর্শে ১৩৪টি আসন কমাল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে (খুবি) ভর্তিতে ১৩৪টি আসন কমানো হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পরামর্শে এসব আসন কমানো হয়েছে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা গুণতম মানে নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে মত তাদের।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮টি স্কুলের (অনুষদ) ২৯টি ডিসিপ্লিনে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ১০৯টি। যা গত শিক্ষাবর্ষের (২০২০-২১) চেয়ে ১৩৪টি কম। গত বছর মোট আসন সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৪৩টি।
এর মধ্যে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলে ৩২টি, জীববিজ্ঞান স্কুলে ৪৫টি, কলা ও মানবিক স্কুলে ২৪টি, সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলে ২০টি, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলে ১৩টি আসন কমেছে। আইন স্কুল, চারুকলা স্কুল এবং শিক্ষা স্কুলের আসন সংখ্যার পরিবর্তন হয়নি।
বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ৮টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) ডিসিপ্লিনে ৩টি আসন কমে বর্তমান আসন সংখ্যা ৩৭ টি। গণিত ডিসিপ্লিনে ১৫টি আসন কমে বর্তমানে ৪৫টি। পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনে ৭টি আসন কমে বর্তমান আসন ৪০টি। এছাড়া রসায়ন ডিসিপ্লিনে ৭টি আসন কমে বর্তমান আসন ৪০টি।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের গবেষণায় অনুদান দেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
এছাড়া, স্থাপত্য ডিসিপ্লিনে ৩৭টি আসন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিনে ৪০টি আসন, নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনে ৪০টি আসন, পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনের ৪০টি আসন অপরিবর্তিত রয়েছে।
জীববিজ্ঞান স্কুলের ৭টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে শুধু বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (বিজিই) ডিসিপ্লিনের ৪০টি আসন বহাল আছে। বাকি ৬টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে এগ্রোটেকনোলজি, ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি (এফএমআরটি), ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি (ফউটে), ফার্মেসি এবং সয়েল ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে কমে বর্তমান হয়েছে ৪০টি। এছাড়া এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স (ইএস) ডিসিপ্লিনের আসন সংখ্যা ৬০ থেকে কমে ৪০টি হয়েছে।
কলা ও মানবিক স্কুলের ৩টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ইংরেজি ও বাংলা ডিসিপ্লিনে ১২টি করে আসন কমে বর্তমান আসন সংখ্যা ৪৫টি। ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ৪০টি আসন অপরিবর্তিত রয়েছে।
সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের ৪টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে অর্থনীতি ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিনের আসন ৪৫ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৪০টি। সমাজবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনে ৫০ থেকে কমে ৪০টি এবং গণসংযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের ৪০টি আসন অপরিবর্তিত রয়েছে।
ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ২টি ডিসিপ্লিনের মধ্যে ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনে ১৩টি আসন কমে দাঁড়িয়েছে ৪০টি এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ডিসিপ্লিনের ৪০ আসন অপরিবর্তিত রয়েছে।
তাছাড়া আইন স্কুলের অধীন আইন ডিসিপ্লিনের ৪০টি আসন, শিক্ষা স্কুলের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ডিসিপ্লিনের ২৫টি আসন এবং চারুকলা স্কুলের ড্রইং অ্যান্ড পেন্টিং, প্রিন্ট মেকিং এবং ভাস্কর্য ডিসিপ্লিনের ২০টি আসন অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এবারের ১১০৯টি আসনের ভিতরে বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ৭০৯টি আসন, মানবিক বিভাগের জন্য ১৬৯টি আসন এবং ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১২০টি আসন রয়েছে। বাকি ১১১টি আসন সবার জন্য। এছাড়া প্রতিটি ডিসিপ্লিনে মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় একটি করে আসন সংরক্ষিত থাকছে এবং প্রতিটি স্কুলে বিকেএসপি কোটায় একটি করে আসন রয়েছে। পাশাপাশি সব ডিসিপ্লিনেই বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, আমরা বিশ্বমানের গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে চাই এবং কোয়ালিটি শিক্ষা দিতে চাই। এ বিষয়ে সব স্কুলের ডিনের সঙ্গে মিটিং করে পরামর্শ নিয়ে সিট সংখ্যা সামঞ্জস্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই কোয়ালিটি শিক্ষা দেওয়ার স্বার্থে ইউজিসির পরামর্শ মোতাবেক সিট সংখ্যা যৌক্তিকীকরণ করা হয়েছে।