পূর্ব শত্রুতার জেরে কুবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মূল ফটক সংলগ্ন হোটেলে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের এক কর্মী দুপুরের খাবার খেতে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় রামদা, রড, হকি স্টিক, প্লাস্টিকের পাইপসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। দু’পক্ষের ইটপাটকেলে গণমাধ্যমকর্মীসহ আনুমানিক ২০ জন আহত হয়।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টার দিকে শুরু হওয়া দুই ঘন্টা ব্যাপী এই সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই সংঘর্ষে জড়ায় দুই গ্রুপ।
সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদেৎ মো. সায়েম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) খাইরুল বাশার সাকিব, একই হলের সাংগঠনিক সম্পাদক পাপন মিয়াজী, ছাত্রলীগ কর্মী কাউছার , সেলিম, মীরহাম রেজা, রাশেদ, বিজয় এবং কাজী নজরুল ইসলাম হলের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ ও একই হলের ছাত্রলীগকর্মী বায়েজিদ আহমেদ বাপ্পী, ফয়সাল, কামরুল, সাগর দেবনাথ, এমরান, আশিক, জামান, জয়রাজ, তানভীর, নাহিয়ান, নাজিমসহ দুইপক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। আহতরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যাক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই দুই হলের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় নজরুল হলের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করে বঙ্গবন্ধু হলের এক ছাত্রলীগকর্মী। সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করা চেষ্টা করে এবং ঘটনা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: দেশসেরা কলেজের ছাত্রাবাস: ছাদ চুইয়ে পড়ে পানি, শৌচাগারের দরজা ভাঙা
এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, গত কাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হলের পোলাপান আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালাচ্ছে। তারা সব কিছু পূর্ব পরিকল্পনা ভাবে আক্রমণ করতেছে। আমরা আজকে সন্ধ্যার ভিতরে প্রশাসনের নিকট একটি সমাধান চাই।
বঙ্গবন্ধু হলের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) খায়রুল বাশার সাকিব বলেন, আমাদের একজন জুনিয়রকে পেয়ে তারা আক্রমণ করে বসে। পরবর্তীতে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমরা এটার বিচার চাই৷
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে সংঘর্ষের পর আমি সারারাত ধরে হলেই অবস্থান করি এবং পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে চেষ্টা করি। কিন্তু দুপুরে ছেলেরা খাওয়ার জন্য বের হলে তারা হামলার শিকার হয়। যার ফলে পুনরায় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ আমার হলের সবাইকে আমি হলে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হই। আর যারা আহত হয়েছে তাদেরকেহাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মিহির লাল ভৌমিককে ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায় নি।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, ছাত্রনেতারাসহ মিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এখন পরিস্থিতি শান্ত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটা সমাধান করার চেষ্টা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাধান করতে না পারলে আমরা আইনিভাবে ব্যবস্থা নিব।