‘আত্মহত্যা নয়, উর্মিকে হত্যা করেছে তার স্বামী’- মানববন্ধনে সহপাঠীরা
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নিশাত তাসনিম ঊর্মিকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে মানববন্ধন করেছে বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ্ আলী চৌধুরী ও ড. মৌসুমী আকতার মৌ সহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ সময় তাদের হাতে ‘সহপাঠী হত্যার বিচার চাই’, ‘খুনি প্রিন্সের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, বাংলার মাটিতে খুনির ঠাঁই নাই’, ‘খুনি প্রিন্সের ফাঁসি চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ইত্যাদি ফেস্টুন দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ভিডিও গেম নয়, সন্তানদের বিকালে খেলার মাঠে আনুন: গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
ঊর্মি স্বামীর হাতে খুন হয়েছে দাবি করে সহপাঠী রায়হানা নিগার বলেন, যাকে এতো ভালোবেসে বিশ্বাস করে ঘর বেঁধেছিল, সেই আজকে তার ঘাতক। সে কি কখনো চেয়েছিল যে তার স্বামীর হাতে তার মৃত্যু হবে। এমনটা তো হওয়ার কথা ছিলনা। সে হয়তো তার ব্যক্তিগত সমস্যার কথা আমাদের সাথে বলতে পারেনি। যার জন্য আজকে তাকে এই পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের বিভাগের আর কারো সাথে যেন এমন পরিণতি না হয়।
নিহত ইবি ছাত্রীর খুনি স্বামীর শাস্তি চেয়ে ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ্ আলী চৌধুরী বলেন, আমরা শুনেছি ঊর্মির স্বামী ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন এলাকার প্রভাবশালী। তারা প্রভাব খাটিয়ে এই মামলা আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা যতবড়ই প্রভাবশালী হোক , আইনের উর্ধ্বে নয়। আমরা এই মানববন্ধন থেকে তার খুনি স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধন শেষে তারা মৃত্যঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরাল চত্বর থেকে প্রতিবাদ র্যালী বের করে। র্যালীটি প্রশাসনিক ভবন চত্বর হয়ে অনুষদ ভবনে যেয়ে শেষ হয়।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী মোড় এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিশাত তাসনিম উর্মিকে (২৩) শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেন নিহতের পরিবার। এ ঘটনায় ঊর্মির পরিবার বাদী হয়ে গাংনী থানায় হত্যা মামলা করেছে। পরে শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অভিযুক্ত স্বামী প্রিন্স ও তাঁর বাবাকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করেছে গাংনী থানা পুলিশ।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আত্মহত্যা না হত্যা এখন বলতে পারব না। ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে। তবে নিহতের স্বামী প্রিন্স ও শ্বশুর হাসেম শাহ্কে গাংনী আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।