সরকারি চাকরিতে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত
চাকরিতে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নেওয়া হয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদেরও ডোপ টেস্টের আওতায় আনা হবে। মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির দ্বিতীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠকে মাদকের বিচারাধীন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে আলাদা আদালত গঠনের পক্ষেও মতামত দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি তাদের ইতিবাচক মনোভাবের কথাও জানান। একই সঙ্গে অনলাইনে মাদক বেচাকেনা বন্ধে কঠোরভাবে মনিটরিং করে ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে মত দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলেই শেষ সব ধরনের চাকরির স্বপ্ন
বৈঠকে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব এবং কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে কমিটির সদস্যরা মাদক বন্ধে কঠোর অবস্থানের পক্ষে তাদের অভিমত জানান।
আরও পড়ুন: ডোপ টেস্ট কি? ধরা পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যাবে?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে মত ব্যক্ত করা হয়। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে অবহিত করেন, বর্তমানে পুলিশ ও বিজিবির চাকরির ক্ষেত্রেও কঠোরভাবে এ নিয়ম মানা হচ্ছে। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগেও এ নিয়ম কার্যকর করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে প্রত্যেককে ডোপ টেস্ট করা হবে’
বৈঠক থেকে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের নিয়োগেও ডোপ টেস্ট কার্যকর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ-মাদ্রাসায় মাদকবিরোধী প্রচারণা বৃদ্ধির পক্ষে এবং বিভিন্ন পণ্যের মোড়কের গায়ে ‘মাদককে না বলুন’ প্রচারণা যোগ করার পক্ষে মত দেওয়া হয়।
বৈঠকে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবদুস সবুর মন্ডল মাদক সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও তাদের মন্ত্রণালয়ের অবস্থান প্রকাশ করেন। বৈঠকে মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন বোর্ডের কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
আরও পড়ুন: ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে সরকারি আজিজুল হক কলেজ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘চাকরিতে নিয়োগের সময় ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতো এটা আমরা শুরু করতে যাচ্ছি। অনেক চাকরিজীবী বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীতে যারা চাকরি করছেন, যারা মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করছেন, তাদের মধ্যে যাকে মাদকাসক্ত বা মাদকের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করছি এবং ডোপ টেস্টে যারা শনাক্ত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন যত নিয়োগ হচ্ছে সেখানে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। সরকারি যে কোনো চাকরির জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়ে আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি। কাজেই এখন থেকে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও চাচ্ছি যাতে নব প্রজন্ম বিপথগামী না হয়, ভুল পথে না যায়, সেজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। ধীরে ধীরে ব্যবস্থা নিচ্ছি।