যুদ্ধক্ষেত্রে যৌন সন্ত্রাস প্রতিরোধ করে শান্তিতে নোবেল
- টিডিসি অনলাইন
- প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:১৪ PM , আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮, ০৫:৪৫ PM
২০১৮ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেলেন কঙ্গোর ধাত্রীবিদ্যাবিশারদ ডেনিস মুকওয়েজি এবং জঙ্গিদের হাতে ধর্ষণের শিকার ইয়াজিদি নারী নাদিয়া মুরাদ। যৌন সহিংসতা ও হয়রানির ব্যাপারে বিশ্বজুড়ে সচেতনতা তৈরির আন্দোলন করে তারা যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
শুক্রবার সুইডেনের স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে এই দুই কর্মীর নাম ঘোষণা করেছে। চলতি বছরের ১০ ডিসেম্বর অসলোতে নোবেল প্রবর্তনকারী আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠানে মুকওয়েগে ও নাদিয়ার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
নোবেল কমিটি বলছে, যুদ্ধকালে ও সশস্ত্র সংগ্রামের সময় যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে অবদান রাখায় নাদিয়া মুরাদ ও ডেনিস মুকওয়েজিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
ডেনিস মুকওয়েজি তাঁর জীবনের বড় একটি সময় ব্যয় করেছেন কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে যৌন সহিংসতার শিকার মানুষের সাহায্যার্থে। যৌন নির্যাতনের শিকার হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা করেছেন তিনি।
অপরদিকে ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় ছোট্ট গ্রাম কোচোতে পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন ইয়াজিদি তরুণী নাদিয়া মুরাদ। ২০১৪ সালে ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠী (আইএস) ঢুকে পড়ে ওই গ্রামে। একদিন গ্রামের সবাইকে অস্ত্রের মুখে একটি স্কুলে ঢোকানো হয়। পুরুষদের আলাদা করে স্কুলের বাইরে দাঁড় করানো হয়। এর পরই মুহুর্মুহু গুলিতে নাদিয়ার ছয় ভাইসহ সব পুরুষকে হত্যা করা হয়। পুরুষদের হত্যা করার পর আইএস জঙ্গিরা নাদিয়া ও অন্য নারীদের একটি বাসে করে মসুল শহরে নিয়ে যায়। সেখানে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি হন নাদিয়াও। আইএসের যৌনদাসী হিসেবে বেশ কিছুদিন থাকার পর পালিয়ে আসেন তিনি।
আইএসের কাছ থেকে পালিয়ে আসার পর নাদিয়া মুরাদ জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূত হন। মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী আমাল ক্লুনির সঙ্গে আইএস জঙ্গিদের হাতে বন্দী ইয়াজিদি নারী ও যাঁরা পালিয়ে এসেছেন, তাঁদের নিয়ে কাজ করছেন তিনি। নোবেল কমিটি বলেছে, নাদিয়া এত কষ্ট সহ্য করেও অন্যদের পক্ষে কথা বলার ক্ষেত্রে অসাধারণ সাহস দেখিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এই বছর শান্তিতে নোবেল পুরষ্কারের জন্য ৩৩১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে মনোনয়ন দিয়েছিল নোবেল কমিটি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সম্ভাব্য বিজয়ীদের তালিকায় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা ম্যার্কেল, কংগোর ডাক্তার ডেনিস মুকওয়েজ, কারারুদ্ধ সৌদি ব্লগার রাফি বাদাউইয়েসহ অনেকের নামই ছিল। কিন্তু সবাইকে হঠিয়ে এই পুরস্কার পেলেন মুকওয়েজি এবং নাদিয়া।