গণ বিশ্ববিদ্যালয়
বিদায় বেলায় রঙিন উৎসব
- তানভীর আহম্মেদ, গবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:৩৬ PM , আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯:৩৬ PM
সময় বহমান, আপন গতিতে ছুটে চলে অবিরাম। সময়ের মতো জীবনও থেমে থাকে না। সময়ের তালে তালে একটা অধ্যায় শেষ হয়ে যোগ হয় আরেকটা অধ্যায়ের। এই ছুটে চলার মাঝে সবার কাছে স্বর্ণালী মূহুর্ত বোধহয় ছাত্র জীবনে কাটানো সময়টুকুই। কিন্তু, এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় তা ফুরিয়ে যেতে কতক্ষণ। তাই বলে তো আর সব সময় দুঃখের জলে ভাসা যায় না। ছোট্ট জীবনে আনন্দই হলো জীবনের বড় স্বার্থকতা।
এজন্যই হয়তো বেদনার রঙ সব সময় মলিন না।যেমনটা হয়নি সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) আইন বিভাগের ১৭ তম ব্যাচের বিদায় উৎসবে। বিদায় বেলায় রঙিন উৎসব ছিল তাদের দুঃখ বিলাস। করোনার থাবায় থেমে যাওয়া ১৮ মাস নিয়েই চার বছরের ক্যাম্পাস জীবনের ইতি ঘটান ৩৮ শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: গবি ক্যাম্পাসে শীতের ছোঁয়া
নতুন জীবনের পথে পা বাড়ানোর আগে শেষ মূহুর্তটুকু রঙিন খামে মুড়িয়ে নিতে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে নিজেদের করে নিয়েছিল শনিবারের (১১ ডিসেম্বর) দিনটিকে। বিচ্ছেদ-বেদনা ভুলে সবাই নিজেদের আপন করে নিয়েছিল। উৎসবমুখর আগমনে চার বছরের রাজত্ব শেষে উৎসবমুখর প্রস্থান। এ যেন শুরু থেকে শেষ আর শেষ থেকে শুরু। বিদায় বেলায় ক্যাম্পাসের প্রতিটা প্রাঙ্গণে রেখে যাওয়া স্মৃতিতে তাদের অমলিন করে রাখতে আয়োজন করা হয়েছিল নানা অনুষ্ঠান।
শুরুতে বিভাগের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষকদের নিয়ে বিশেষ স্মৃতিচারণ মূলক ঘটনাবলি নিয়ে আলোচনা সভা। এরপর ফটোসেশন ও কুশল বিনিময়। তারপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিশেষ প্রীতিভোজের মাধ্যমে মধুর স্মৃতি তৈরী করেন। তারপরই শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়ে বিভাগের শিক্ষকগণ বিদায় জানালে শিক্ষার্থীরাও নিজেরা নিজেদের বিদায় জানায়।
আরও পড়ুন: গবির নতুন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন
কিন্তু, চার বছর ধরে রাজত্ব করা ক্যাম্পাসে সবাইকে এত সহজেই বিদায় দেওয়া হবে তা কি আর হয়। তাইতো, পুরো বিভাগকে তারা সাজিয়ে তুলেছিল অন্য রকম সাজে। হরেক রকম ফুল, বেলুন, ফিতা, কাগজে ফুটে উঠেছিল বর্ণীল পরিবেশ।
সেই সঙ্গে সাদা টি-শার্টে ইচ্ছেমত আঁকাআকি, কথা, দুষ্টুমি আর ভাবের আদান-প্রদানে খই ফুটানো। সকাল ১০ টা বাজতেই তাদের দুষ্টুমি, হৈ-হুল্লোড়, মারামারি, আনন্দ-উল্লাস শুরু হয়েছিল। বিকাল ৪ টায় গিয়ে তার সাথে যুক্ত হয়েছিল অন্য মাত্রা। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উদ্দাম নাচ-গান আর ছোটাছুটি ক্যাম্পাসকে মাতিয়ে তোলে। সেই সঙ্গে রঙ মাখামাখি, ছোড়াছুড়ি, হাসা-তামাশায় মুখর করেছিল চারপাশ। পাশাপাশি চলে ছবি তোলার উৎসব। শেষ সময়ে স্মৃতিটুকু আলিঙ্গন করতে এই ছবিগুলো যেন অনেক
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ জাতীয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সদস্য পদ পেল জিবিপিএস
গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠলো সেই সাথে আনন্দেরও। এভাবে চলতে চলতে উৎসবের আকাশের সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ার সাথে সাথে বিদায়ের ঘন্টা বাজতে শুরু করে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাা শেষ মুহূর্তে নিজেরা নিজেদের কাছে টেনে নেয় পরম যত্নে। অটোগ্রাফ আর শুভকামনায় ঘটে শিক্ষা সমাপনী। কিন্তু, প্রযুক্তি আর ছুটে চলা এ দুনিয়ার বিদায় শেষ কথা নয়। নানাভাবে নানা সময়ে একে অপরের সঙ্গে আবার দেখা হবে, আবারো জমবে মধুর আড্ডা সেই প্রত্যাশায় একে অপরকে বিদায় জানায়।